অথবা, চলক বলতে কি বুঝ? বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন চলকের মধ্যে বৈসাদৃশ্য দেখাও।
অথবা, চলক বলতে কি বুঝ? বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন চলকের মধ্যে অমিল খুঁজে বের কর।
অথবা, চল বলতে কি বুঝ? বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন চলের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
অথবা, চল বলতে কি বুঝ? বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন চলের মধ্যে বৈসাদৃশ্য লিখ।
অথবা, চল বলতে কি বুঝ? বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন চলের মধ্যে কী কী অমিল খুঁজে পাওয়া যায়।
উত্তর৷ ভূমিকা : বিজ্ঞান একটি বিমূর্ত প্রত্যয়। আর বিজ্ঞানের ভিত্তি হল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। বিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশ এবং অব্যাহত অগ্রগতির যাত্রা বজায় রাখে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি তবে এ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি একটি পদ্ধতি নয়, বরং একাধিক পদ্ধতির সমন্বয়। একটি ঘটনার পূর্বাপর বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াদির সাথে কার্যকারণ সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে একটি সাধারণ নিয়মে প্রতিষ্ঠিত করাই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির অন্যতম লক্ষ্য। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এ লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করার জন্য কতিপয় উপাদান নিয়ে কাজ করে। এ উপাদানগুলোর মধ্যে চলক অন্যতম।
চলক বা চল : বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সবচেয়ে ক্ষুদ্র অথচ সর্বাধিক সংবেদনশীল উপাদান হচ্ছে চলক। সাধারণ কথায় যা পরিবর্তিত হয় তাই চলক। মূলত চলক এমন এক ধরনের গুণ, বৈশিষ্ট্য বা অবস্থা, যা একই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যক্তি, একক বা ঘটনা পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন মনীষীগণ বিভিন্নভাবে চলকের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাঁদের কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হল :
Earl R. Babbie এর মতে, “Variable are logically related sets of attributes.” এখানে Attribute বলতে বিশ্লেষণাধীন এককের গুণ বা সংলক্ষণকে বুঝানো হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ‘রাজনৈতিক পরিচিতি,চলকটি ‘রক্ষণশীল’, ‘উদারপন্থি’ ইত্যাদি গুণের সমষ্টি মাত্র।
P. V. Young এর মতে, “চলক হল যে কোন পরিমাণ বা বৈশিষ্ট্য, যা বিভি সংখ্যামান অথবা শ্রেণীতে বিভক্ত।এক্ষেত্রে লিঙ্গ, দাম, মজুরি, বয়স ও সময় ইত্যাদি চলকের উদাহরণ।”
B. F. Anderson উল্লেখ করেছেন, “চলক হল পরস্পর বিচ্ছিন্ন গুণের সমাবেশ। এখানে গুণ বলতে ঐসব বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে, যা নির্দিষ্ট কিছু দিকের প্রতি ইঙ্গিত করে। যেমন- ‘লাল’ একটি বৈশিষ্ট্য যা ‘কালো’ বা ‘হলুদ’ হতে আলাদা
এবং যার নিজস্ব কিছু দিক রয়েছে। এমতে চলক হল, যেমন- পুরুষ, মহিলা, সাদা, কালো, ঘন, পাতলা ইত্যাদি।”
Gupta এবং Gupta এর ভাষায়, “চলক শব্দটি বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের নির্দেশ দেয় যা একটি গণসংখ্যা নিবেশনে পরিমাণগত বা বিস্তৃতভাবে পার্থক্যপূর্ণ হতে পারে।”
সুতরাং বলা যায় যে, বস্তুগত বা পরিমাণগত যে কোন পরিবর্তনের সূচক চলক বলে অভিহিত হতে পারে।
বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন চলকের পার্থক্য : বিচ্ছিন্ন চলক এবং অবিচ্ছিন্ন চলক দু’টি পরিসংখ্যান উপাত্ত উপস্থাপনের দু’টি আলাদা রূপ।এদের গঠন ও উপস্থাপনের পদ্ধতিতে বেশ পার্থক্য বিদ্যমান। এসব পার্থক্যের আলোচনা নিম্নরূপ :

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উল্লিখিত দৃষ্টিকোণ থেকে বিচ্ছিন্ন চলক এবং অবিচ্ছিন্ন চলকের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। তবে এ দু’টির মধ্যে পার্থক্য থাকলেও সম্পর্ক যে নেই তা বলা যায় না। তাই অনেক ক্ষেত্রে একটি
অপরটির সমার্থক আবার বিপরীতার্থক।


