প্রতিসমভারীকরণ ও দৈবনমুনা পদ্ধতি বলতে কী বুঝ?

অথবা, প্রতিসমভারীকরণ ও দৈবনমুনা পদ্ধতি কাকে বলে?
অথবা, প্রতিসমভারীকরণ ও দৈবনমুনা পদ্ধতির সংজ্ঞা দাও।
অথবা, প্রতিসমভারীকরণ ও দৈবনমুনা পদ্ধতি কী?
অথবা, প্রতিসমভারীকরণ ও দৈবনমুনা পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর।। ভূমিকা : চল একটি বৈজ্ঞানিক শব্দ, যার ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Variable এবং বাংলা অর্থ হল চলনশীল না পরিবর্তনশীল। সাধারণ অর্থে চল বলতে এমন একটা বৈশিষ্ট্য বা গুণ বুঝায়, যা একই পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার করা যেতে পারে। চল অর্থাৎ, চল মূল্যায়ন পরিবর্তনশীল। একটি পরীক্ষণে অনেকগুলো→ণাবলি বা বৈশিষ্ট্যের সমাবেশ হতে পারে। অতএন চল বলতে আমরা বুঝি যে কোন উপাদান, যা আচরণের উপর প্রভাব বিস্তার করে তাহাই চল। চল পরীক্ষণের এমন একটা বৈশিষ্ট্য যা ফলাফলের উপর প্রভাব বিস্তার করে।
প্রতিসমভারীকরণ : যখন একই পরীক্ষণ পাত্রদের একাধিক পরীক্ষণমূলক অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়, তখন অনেক সময় পরীক্ষণ পাত্রদের প্রথম অধিবেশন এর অভিজ্ঞতা তাদের দ্বিতীয় অধিবেশনের প্রতিক্রিয়ার উপর প্রভাব বিস্তার করে।এক্ষেত্রে ফলাফলে ভ্রান্তি থাকতে পারে। বিভিন্ন পরীক্ষণমূলক অবস্থার প্রভাব সব পরীক্ষণ পাত্রদের মধ্যে সমানভাবে বিতরণ করে দেওয়ার জন্য প্রতিসমভারীকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। যেমন- লাল, সবুজ ও হলুদ এ তিনটি রঙের প্রতি প্রতিক্রিয়াকাল নির্ণয় করা হবে। এটা সজ্ঞাত যে, কোন বিশেষ রঙের আলো চোখে নিক্ষেপ করা হলে, তার প্রভাব পরবর্তী আলোর প্রতি প্রতিক্রিয়াকে প্রভাবান্বিত করতে পারে, তার উপরে পরীক্ষণ পাত্রদের অনুশীলনের প্রভাব ও ক্লান্তি ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। এখন এসব বাহ্যিক শর্ত যাতে কোন একদল পরীক্ষণ পাত্রকে বিশেষভাবে প্রভাবান্বিত না করে, সেজন্য প্রতিসমভারীকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। পরীক্ষণে যদি ৩০ জন পরীক্ষণ পাত্র পাওয়া যায়, তাহলে পরীক্ষণ পাত্রদের প্রত্যেককেই তিনটি আলো একবার প্রথমে, একবার শেষে ও একবার মধ্যবর্তী অধিবেশনে উপস্থিত করতে হবে।
দৈবনমুনা পদ্ধতি : সাধারণত দু’টি বিশেষ ক্ষেত্রে দৈবনমুনা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। যেমন- ১. যখন আমরা জানতে পারি একটি বাহ্যিক চল পরীক্ষণে প্রভাব বিস্তার করছে অথচ সেটি পূর্বোল্লিখিত পদ্ধতিগুলোর সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব
নয় এবং ২. যখন আমরা মনে করি যে,কতকগুলো বাহ্যিক চল পরীক্ষণে প্রভাব বিস্তার করতে পারে অথচ সেগুলো সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করতে পারি না, এক্ষেত্রে আমরা ধরে নিই যে, যদি কোন বাহ্যিক চলের পরীক্ষণে প্রভাব বিস্তার করার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে দৈব নিয়মানুসারে উক্ত বাহ্যিক চলগুলো পরীক্ষণ দল ও নিয়ন্ত্রিত দলে সমানভাবে কার্যকরী হবে।সুতরাং, তাদের প্রভাব শূন্য হবে। যেমন- পরীক্ষণ পাত্রদের অতীত অভিজ্ঞতা, প্রেষণার মাত্রা, পরীক্ষণের পূর্বে খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ, পরীক্ষণ পাত্রদের নিজেদের মধ্যকার পরিচিতি প্রভৃতি বহুসংখ্যক বাহ্যিক চল শুধুমাত্র দৈবনমুনাভিত্তিক পদ্ধতিতেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার শেষে আমরা বলতে পারি যে, উপরে উল্লিখিত কলাকৌশল বা পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে বাহ্যিক চল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আর বাহ্যিক চল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে পরীক্ষণের ফলাফল নির্ভরযোগ্য ও সঠিক হয়। এছাড়া বাহ্যিক চল নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে পরীক্ষণের ব্যবহারিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়।