পরীক্ষণ পরিচালনার ধাপগুলো কী কী?

অথবা, পরীক্ষণ পরিচালনার পর্যায়গুলো কী কী?
অথবা, পরীক্ষণ পরিচালনার স্তরগুলো কী কী?
অথবা, পরীক্ষণ পরিচালনার ধাপগুলো সংক্ষেপে লিখ।
অথবা, পরীক্ষণ পরিচালনার পর্যায়গুলো সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর।।ভূমিকা : মনোবিজ্ঞানের ব্যবহৃত পদ্ধতিসমূহের মধ্যে পরীক্ষণ পদ্ধতি অন্যতম। পরীক্ষণ পদ্ধতির সাহায্যে মনোবিজ্ঞান থেকে পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞানের উদ্ভব ঘটেছে। পরীক্ষণ পরিচালনা করতে গেলে কতকগুলো ধাপ বা পর্যায় মেনে চলতে হয়। এসব ধাপ বা পর্যায়গুলো সঠিকভাবে মেনে চললে পরীক্ষণের সুষ্ঠু ফলাফল পাওয়া যায়, যার মাধ্যমে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব হয়।
পরীক্ষণ পরিচালনার ধাপসমূহ বা পর্যায়সমূহ : পরীক্ষণের বিষয় ও এর সমস্যার উপর নির্ভর করে পরীক্ষণ কেমন হবে। যদি পরীক্ষণের সমস্যা জটিল হয়, তাহলে পরীক্ষণে সুষ্ঠু ফলাফল পেতে বেশ বেগ পেতে হয়। যে কোন পরীক্ষণ
পরিচালনা করার জন্য কতকগুলো ধাপ বা পর্যায় অনুসরণ করতে হয়। নিম্নে সে ধাপগুলো আলোচনা করা হলো:
১. দক্ষ গবেষক : পরীক্ষণ পরিচালনার জন্য সর্বপ্রথম দরকার একজন দক্ষ গবেষক। কেননা চল নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গবেষকের ভূমিকাই অগ্রগণ্য। গবেষক যদি দক্ষ না হয়, তাহলে সঠিকভাবে চল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না এবং গবেষণার ফলাফলও ভালো আসবে না। তাই দক্ষ গবেষকের উপরই পরীক্ষণ সর্বাধিক নির্ভরশীল।
২. পরীক্ষণের পরিকল্পনা : পরীক্ষণ পরিচালনা করার আগেই গবেষককে সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। কেননা সুষ্ঠু পরিকল্পনার উপর পরীক্ষণের ফলাফল বহুলাংশে নির্ভরশীল।
৩. পরীক্ষণের যন্ত্রপাতি : পরীক্ষণ পরিচালনার জন্য যন্ত্রপাতি অবশ্যই প্রয়োজন। কেননা যন্ত্রপাতি ছাড়া বর্তমানে কোন পরীক্ষণ বা গবেষণা সম্পন্ন হয় না। মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীর আচরণের উপর নিরপেক্ষ চলের প্রভাব লক্ষ্য করার জন্য স্থায়ী যন্ত্রপাতির প্রয়োজন।
৪. পরীক্ষণ পাত্র নির্বাচন : প্রকল্প নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষণ পাত্র নির্বাচন করা প্রয়োজন। পরীক্ষণ পাত্র বলতে যাদের উপর পরীক্ষণ পরিচালনা করা হয় তাদের বুঝায়।
৫. চলের নিয়ন্ত্রণ : গবেষকের আরেকটি অন্যতম দায়িত্ব হলো পরীক্ষণ চলের নিয়ন্ত্রণ। পরীক্ষণে সমস্যা নির্ধারণ, যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং পরীক্ষণ পাত্র নির্বাচনের পর গবেষককে চল নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
৬. পরীক্ষণের কার্যক্রম পরীক্ষণের চল নিয়ন্ত্রণ করার পর গবেষক তার পরীক্ষণ কার্যক্রম শুরু করতে পারে।গবেষক যেভাবে তথ্যসংগ্রহ করার পরিকল্পনা নিয়েছেন ঠিক সেভাবেই তিনি কাজ করবেন।
৭. উপাত্ত সংগ্রহ : পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর গবেষককে উপাত্ত সংগ্রহ করতে হবে। উপাত্ত সংগ্রহ করার সময়, গবেষককে গোপনীয়তা ও সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে সঠিক ও নির্ভুল উপাত্ত পাওয়া যায়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মনোবিজ্ঞান পরীক্ষণ পরিচালনার ক্ষেত্রে উপরিউক্ত ধাপ বা পর্যায়গুলো অবশ্য পালনীয়। একটি পরীক্ষণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হলে তা যথার্থ নিয়মানুযায়ী সম্পন্ন করতে হবে। পরীক্ষণের কারণেই মূলত মানবকল্যাণে মনোবিজ্ঞানের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।