অথবা, যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতা বা বাধাসমূহ কী কী? বর্ণনা কর।
উত্তর।। ভূমিকা : একটি সংগঠনের জন্য সমাযোজন বা যোগাযোগ প্রক্রিয়া অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।সংগঠনের ক্ষমতা, গতিশীলতা, কার্যকারিতা প্রভৃতি নির্ভর করে সুষ্ঠু ও যথার্থ যোগাযোগের উপর। আর আধুনিক সংগঠন ব্যবস্থাপনায় এ যোগাযোগের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।
যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতা বা বাধাসমূহ : সার্বিকভাবে প্রশাসনিক সমাযোজনের প্রতিবন্ধকতা বা বাধাসমূহকে নিম্নরূপভাবে আলোচনা করা যায় :
১. সঠিক মাধ্যম নির্ণয়ে ব্যর্থতা : সমাযোজনের সঠিক এবং উপযুক্ত মাধ্যম নির্ণয়ে ব্যর্থ হলে গ্রাহকের নিকট বার্তা,বা সংবাদ সঠিকভাবে না পৌছার সম্ভাবনাই বেশি, যার ফলে প্রশাসনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।
২. অবিশ্বাস : সংবাদ ও তথ্য প্রেরকের নিকট অবিশ্বাসের কারণে অনেকে সঠিকভাবে তথ্য গ্রহণ করে না বরং পরিবর্তন করে নিজের মত গ্রহণ করে। ফলে সমাযোজনে অসুবিধা সৃষ্টি হয়।
৩. ভাষাগত বাধা : ভাষা হলো সমাযোজনের প্রধান বাহন। দুর্বোধ্য, অস্পষ্ট এবং প্রয়োজনীয় দ্বৰ্থবোধক ভাষা ব্যবহারের ফলে সঠিক ও বিশুদ্ধ সমাযোজনে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
৪. মনোসামাজিক বাধা : ক্ষমতা, পদমর্যাদা, সম্মান, শিক্ষা, সামাজিক মর্যাদা ইত্যাদি দ্বিমুখী সমাযোজনে সমস্যা সৃষ্টি করে।উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কোন প্রতিষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অধীনস্থদের মতামত গ্রহণে দ্বিধাবোধ করে। আবার নিম্ন পদস্থদের মনোভাব ঊর্ধ্বতনকে জানাতে মানসিক জটিলতায় ভোগে।
৫. নির্দেশ গ্রহণে অনীহা : নির্দেশ গ্রহণে অনীহা দেখা দিলে নির্দেশ গ্রহীতা সঠিকভাবে নির্দেশ পড়ে না, নোটিস,বুলেটিন, রিপোর্ট ইত্যাদি দেখে না।
৬. পরিবেশগত বাধা : অস্থিতিশীল কিংবা প্রতিকূল পরিবেশের কারণেও অনেক সময় কার্যকর সংযোজন ব্যাহত হয়,যার ফলে প্রশাসনিক কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না।
৭. প্রাতিষ্ঠানিক বাধা : বড় প্রতিষ্ঠানে একটি অনমনীয় যোগাযোগের চ্যানেল থাকে, যা সুষ্ঠু সমাযোজনে বাধা সৃষ্টি করে।
৮. অমনোযোগ : অনেকেই মনোযোগসহকারে বার্তা গ্রহণে ব্যর্থতার ফলে সমাযোজনে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
৯. চিন্তাধারার ভিন্নতা : প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের চিন্তা, অনুভূতি, মূল্যবোধ, ব্যক্তিত্ব ইত্যাদির ভিন্নতার কারণে সংযোজন ব্যাহত হয়।
উপসংহার : যোগাযোগ বা সমাযোজনের প্রতিবন্ধকতা বা বাধাসমূহকে অবশ্যই দূর করতে হবে। প্রতিবন্ধকতা বা বাধাসমূহকে দূর করতে না পারলে এর অর্থই অকার্যকর হয়ে পড়বে।