উত্তর : ভূমিকা : বাংলার ইতিহাসে বার ভূঁইয়াদের আবির্ভাব ষোড়শ শতকের মধ্যবর্তীকাল হতে সপ্তদশ শতকের মধ্যবর্তী
সময়ে। আলোচ্য সময়ে মুঘলদের বিরুদ্ধে যারা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছেন, ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে তারাই বারোভূঁইয়া। মুঘলদের কবল হতে বঙ্গদেশকে মুক্ত রাখার জন্য যেসব মুসলমান ও হিন্দু জমিদারের সংগ্রাম স্মরণীয় হয়ে আছে তাদের মধ্যে ঈসা খান, মুসা খান, রাজা প্রতাপাদিত্য, কেদার রায়, ওসমান খান প্রমুখ নাম উল্লেখযোগ্য। নিম্নে ওসমান খানের পরিচয় দেওয়া হলো।
ওসমান খানের পরিচয় : সুবাদার ইসলাম খানের সময় পূর্ববঙ্গে মুঘল আধিপত্য স্থাপনে যারা বাধা দেন ওসমান খান তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তিনি উড়িষ্যা হতে বিতাড়িত হয়ে ময়মনসিংহের কোকাইনগর অঞ্চলে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ঈসা খানের সাথে যোগদান করে রাজা মানসিংহের বিরুদ্ধে একাধিকবার যুদ্ধ করেন। সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে ইসলাম খান ওসমান খানকে দমন করার জন্য যুদ্ধযাত্রা করেন। শ্রীহট্টের অন্তর্গত দৌলতপুরে উভয়পক্ষে এক ভীষণ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে অপূর্ব বীরত্বের সাথে লড়ে ওসমান খান শেষ পর্যন্ত পরাজিত ও নিহত হন। ওসমান খানের পরাজয় ও মৃত্যুর সাথে সাথে মুঘলদের বিরাট সাফল্য সূচিত হয়। এতদিন পর তাদের সবচেয়ে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী দূরীভূত হলো।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলার বার ভূঁইয়াদের ইতিহাসে ওসমান খান নামটি বিশেষভাবে স্মরণীয়। মোট কথা, বার ভূঁইয়াগণ মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম করে তা এদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শেষ পর্যন্ত মুঘলদের কাছে পরাজিত হলেও তারা যে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তা ছিল সত্যিই প্রশংসনীয়।