ভূমিকা : বাংলার ইতিহাসে বারো ভূঁইয়াদের নাম অবিস্মরণীয়। তারা মুঘল আক্রমণ ঠেকাতে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। বাংলার এ বারোভূঁইয়াদের মধ্যে অন্যতম একজন জমিদার হলেন মুসা খান। বার ভূঁইয়া বলতে সাধারণত বাংলার মুঘল আমলে স্বাধীনভাবে রাজত্বকারী বারজন জমিদারকে বোঝায়। মুসা খান ছিলেন সে যুগের একজন শ্রেষ্ঠ জমিদার। তিনি প্রতাপশালি মুঘল সম্রাট আকবর এর দুর্ধর্ষ বীর সেনাপতি মানসিংহের সাথেও বীরবিক্রমে যুদ্ধ করেছিলেন । নিম্নে মুসা খান সম্পর্কে তুলে ধরা হলো :
→ মুসা খানের পরিচয় : মুসা খান হচ্ছেন সোনারগাঁওয়ের প্রভাবশালী জমিদার ঈসাখানের পুত্র। ঈসা খানের মৃত্যুর পর
মুসা খান ভাটিরাজ্যের অধিকারী হয়েও ছিলেন। কিন্তু তিনি পিতার নীতি অনুসরণ করে না চলে মুঘলদের সাথে বিরোধিতা
করেন। তিনিও তার পিতার ন্যায় বিস্তির্ণ এলাকার জমিদার ছিলেন। ঢাকা ও ত্রিপুরা জেলার অর্ধাংশ, প্রায় সমগ্র ময়মনসিংহ
জেলা এবং রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার কতকাংশ তার জমিদারির অর্ন্তভুক্ত হয়েছিল। সোনারওগাঁও ছিল মুসা খানের রাজধানী। মুসা খান প্রবল বিক্রমে মুঘল সেনাপতি মানসিংহকে পরাস্ত করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তা ধরে রাখতে পারেন নি ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুসা খানের ব্যর্থতার পিছনে তার শৌর্যবীর্যের অভাব ছিল -এ কথাটি ঠিক নয়। অবশ্য
একথা সত্যি যে, যোদ্ধা হিসেবে মুসা খান অমিতবিক্রমের অধিকারী হলেও রণকৌশলের দিক থেকে তিনি তেমন পারদর্শী
ছিলেন না। তার সম্পর্কে “History of Bengal” গ্রন্থে যথার্থই মন্তব্য করা হয়েছে যে, “মুসা খান পিতা ঈসা খানের দক্ষতা,
উচ্চাশা এবং সামরিক প্রতিভা উত্তরাধিকার সুত্রে লাভ করলেও তিনি সুক্ষ্ম বিচারবোধ, সাবধানতা ও দূরদর্শিতা লাভে ব্যর্থ হন।”