উত্তর : ভূমিকা : বাংলার ইতিহাসে বার ভূঁইয়াদের নাম অবিস্মরণীয়। তারা মুঘল আক্রমণ ঠেকাতে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। বাংলার এ বার ভূঁইয়াদের মধ্যে অন্যতম ও সবচেয়ে শক্তিশালী ছিলেন সোনারগাঁও এর ঈসা খান। বারো ভূঁইয়া বলতে সাধারণত বাংলার মুঘল আমলে ‘স্বাধীনভাবে রাজত্বকারী বারজন জমিদারকে বোঝায়। ঈসা খান ছিলেন সে যুগের শ্রেষ্ঠ একজন জমিদার। যিনি প্রতাপশালী মুঘল সম্রাট
আকবরের দুর্ধর্ষ বীর সেনাপতি মানসিংহ কে যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন । নিম্নে ঈসা খান সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
ঈসা খানের পরিচয় : ঈসা খাঁর পিতার নাম কালিদাস তাজদানী। তিনি ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে বাংলায় আগমন করেন। তিনি এখানে এসে এক সুলতানের কন্যাকে বিবাহ করেন। তার মৃত্যুর পর ঈসা খাঁ এক বণিকের আশ্রয়ে মানুষ হতে থাকেন। পরে পিতার সোনারগাঁও -এর জমিদারির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক আবুল ফজল ঈসা খাঁকে সর্বদা ভাটি অঞ্চলের অধিপতিরূপে উল্লেখ করেছেন। ঈসা খাঁর রাজ্য ছিল ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলার পূর্বভাগ, কুমিল্লা ও সিলেট জেলার পশ্চিমাংশ এবং গঙ্গা ও মেঘনা নদীবিধৌত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। তার রাজধানী ছিল সোনারগাঁও। ১৫৯৪ সালে মানসিংহের সাথে তার যুদ্ধ হয়। তুমুল যুদ্ধের পর উভয়পক্ষের মধ্যে সন্ধি হয়। শেষ জীবনে তিনি সম্রাট আকবরের বশ্যতা স্বীকার করলে সম্রাট তাকে “মসনদ-ই-আলা” উপাধিতে ভূষিত করেন।
উপসংহার : ঈসা খানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের নিকট মুঘল বাহিনী হার মানলেও তিনি মুঘলদের সাথে সদ্ভাব বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ ভাবে রাজ্য শাসন করতে চেয়েছেন। তাই মুঘলদের সাথে সন্ধি স্থাপনে আগ্রহী হলেও তিনি তাদের নিকট কখনও।মাথা নত করেন নি।