সুবাদার ইসলাম খান সম্পর্কে যা জান লিখ।

উত্তর : ভূমিকা : ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট জাহাঙ্গিরের রাজত্বকালে ইসলাম খান বাংলার সুবাদার হয়ে আসেন। তিনি ছিলেন ফতেহপুর সিক্রির প্রখ্যাত সাধক শেখ সেলিম চিশতির পৌত্র। তিনি যোগ্য শাসক ও দুর্ধর্ষ বীর ছিলেন। পরাক্রমশালী বারো ভূঁইয়া ও পাঠানদের দমন করে তিনি বাংলায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। নিম্নে সুবাদার ইসলাম খান সম্পর্কে তুলে ধরা হলো :
সুবাদার ইসলাম খান সম্পর্কে বিবরণ :
১. বারো ভূঁইয়া ও অন্যান্য জমিদারের দমন : ইসলাম খান কঠোর হস্তে বাংলার অবাধ্য জমিদার ও বার ভূঁইয়াদের দমন করেন। তিনি গৌড়ের কাছে বীর হাম্বির, সেলিম খাঁ ও প্তাপাদিত্য নামক তিন জমিদারকে মুঘলদের বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করেন। এরপর কয়েকটি যুদ্ধের পর তিনি বার ভূঁইয়াদের প্রধান মুসা খানকে পরাজিত করে বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করেন। পরবর্তীতে প্রতাপাদিত্য বিদ্রোহী হলে তাকেও দমন করেন এবং দৌলতপুরের যুদ্ধে ওসমান খানকে পরাজিত ও নিহত করেন।
২. রাজ্য বিস্তার : ইসলাম খান আরাকানের মগ ও জলদস্যুদের বিতাড়িত করে আরাকান দখল করেন। তিনি আসামের সিলেট এবং কামরূপ জেলাও জয় করেন। ইসলাম খান কাছাড়ের রাজাকেও দিল্লির বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করেন।
৩. দক্ষ শাসক : ইসলাম খান সুদক্ষ শাসক ও বীরযোদ্ধা ছিলেন। তার যোগ্যতার ফলে বাংলাদেশ বার ভূঁইয়াদের কবল মুক্ত হয় এবং বাংলাদেশের জনগণ শান্তি শৃঙ্খলার সাথে বসবাস করার সুযোগ লাভ করে। প্রকৃতপক্ষে বাংলায় মুঘল সাম্রাজ্যের পরিপূর্ণ প্রভাব এবং কর্তৃত্ব স্থাপনের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব তারই। ১৬১০ সালে তিনি রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় নিয়ে আসেন এবং নাম রাখেন জাহাঙ্গীর নগর ।
৪. মৃত্যু : ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকার বলেন, সুবাদার ইসলাম খান ১৬১৩ সালে ভাওয়ালে মৃত্যুবরণ করেন।
উপসংহার : স্বীয় শাসন ক্ষমতা, কৃতিত্ব এবং দক্ষতার কারণে ইসলাম খান বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ মুঘল সুবাদার হিসেবে পরিগণিত ছিলেন। বাংলা মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠায় তার অসামান্য অবদান ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%aa%e0%a6%9e%e0%a7%8d%e0%a6%9a%e0%a6%ae-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%98%e0%a6%b2-%e0%a6%86%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ae/