উত্তর : ভূমিকা : ভারতবর্ষের ইতিহাসে সম্রাট আকবর ছিলেন রাজ্য বিস্তারে অপ্রতিদ্বন্দ্বী সম্রাট। সাম্রাজ্যবাদী শাসক আকবর উপলব্ধি করেন যে, ভারতবর্ষের একচ্ছত্র অধিপত্তি হতে হলে সমরাভিযানের কোনো বিকল্প নেই। তাই তিনি তার রাজত্বকালের চল্লিশ ছর সাম্রাজ্য বিস্তারে ব্যয় করেন। কৌটিল্যের নীতিতে বিশ্বাসী আকবর মনে করতেন “A monarch should be ever intent on conquest ‘other wise his neighbours rise is arms against him.” তাই তিনি অসাধারণ সামরিক প্রতিভা দ্বারা এক বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। নিম্নে সম্রাট আকবরের বাংলা বিজয়ের কারণ তুলে ধরা হলো :
আকবরের বাংলা বিজয়ের কারণ : সম্রাট আকবরের বাংলা আক্রমণের পেছনে কয়েকটি বিশেষ কারণ ছিল। প্রথমত, আকবরের মনে সাম্রাজ্যবাদী নীতি প্রবল ছিল। দ্বিতীয়ত, বাংলার শাসক দাউদ কররানী সম্রাট আকবরের স্বাধীনতা অস্বীকার করে বাদশাহ উপাধিধারণ করে স্বীয় নামে খুৎবা পাঠ ও মুদ্রা জারি করলে আকবর তার প্রতি রুষ্ট হন। তৃতীয়ত, আফগানরা বরাবরই ছিল মুঘলদের শত্রু। তাই বাংলার আফগান শক্তি নির্মূল করার জন্য বাংলা আক্রমণ করেন।
চতুর্থত, দাউদ কররানী মুঘল সাম্রাজ্যের পূর্ব প্রান্তের যামানিয়া দুর্গ অধিকার করলে সম্রাট আকবর বাংলা বিজয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সম্রাট আকবর কর্তৃক বাংলা বিজয় বাংলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সংযোজন করে। এর মাধ্যমে বাংলার স্বাধীনতা বিলুপ্ত হয়। বাংলায় মুঘল শাসন শুরু হয় এবং এদেশে মুঘল সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে। এভাবে সম্রাট আকবর বাংলার মত অনেক রাজ্য জয় করে সাম্রাজ্যের পরিধি সম্প্রসারিত করতে বদ্ধপরিকর হন। স্টানলি লেনপুল বলেন, “সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের মধ্যে আকবর ছিলেন সর্বাপেক্ষা মহান।”