কবিরের দর্শনের মূলকথাগুলো লিখ।

উত্তর : ভূমিকা : কবির রামানন্দের প্রধান শিষ্য ছিলেন। উত্তর ভারতে যে সকল ভক্তিবাদীদের উদ্যোগে হিন্দু-মুসলিম সমন্বয় সাধিত হয়েছিল কবির ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। তৎকালীন সামগ্রিক সমাজ ব্যবস্থা ও পরিবেশ ছিল ঘোলাটে। এরূপ বিরূপ পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করার জন্য কতিপয় সাধকের আবির্ভাব হয়। কবির তাদের মধ্যে একজন। তিনি তার চিন্তা ও উপদেশাবলির মাধ্যমে অনেককে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন। নিম্নে
কবিরের মূলকথা বা উপদেশসমূহ আলোকপাত করা হলো :
→ কবিরের দর্শনের মূলকথা বা উপদেশাবলি : কবিরের দর্শনের মূল কথাগুলো হচ্ছে-
১. ভক্তি বিনা কোনো ধর্মই ধর্ম নয়; ২. ঈশ্বর একজন; ৩. মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই; ৪. স্রষ্টা বা ঈশ্বরের প্রেমই একমাত্র ধর্ম; ৫. গুরু ভক্তকে পথ নির্দেশ করে। তাই গুরু
নির্বাচনে সতর্কতা জরুরি; ৬. বাহ্যিক অনুষ্ঠানে কোনো গুরুত্ব নেই । বৈরাগ্যবাদ অপ্রয়োজনীয়। এছাড়া তিনি বিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে
বিভিন্ন প্রকার বর্ণনা দেন। তার শিষ্যগণ ‘কবির পন্থি’ নামে পরিচিত। কবিরের উপদেশাবলি তার শিষ্য ভগবান দাস ‘বীজক’ গ্রন্থে সংকলন করেন।
উপসংহার : উপরিউক্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে একথা বলা যায় যে, অন্তরকে পাপমুক্ত এবং ভগবানের প্রতি আনন্ত-রিক ভক্তি প্রদর্শনই হলো সর্বধর্মের সার কথা। মূর্তিপূজা ও নামাজ উভয়েই তার আপত্তি ছিল। তথাপি, উভয় সম্প্রদায়ের লোকের নিকটই তিনি সমাদৃত ছিলেন। কবিরের বাণী ভক্তদের মধ্যে
কতখানি কার্যকরী হয়েছিল সে বিষয়ে সন্দেহ থাকলেও একথা বলা যায় যে, তার আদর্শ ও শিক্ষা একেবারে ব্যর্থ হয়নি।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%9a%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%bf-%e0%a6%86/