সুলতানি আমলে রোমাঞ্চমূলক প্রণয়োপাখ্যান রচনায় মুসলমান কবিদের ভূমিকা লিখ।

উত্তর : ভূমিকা : সুলতানি আমলে শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নতুন আঙ্গিকে যাত্রা শুরু করে। এসময় হিন্দু-মুসলিম উভয় কবি-সাহিত্যিকরাই সাহিত্য রচনা শুরু করেন। মুসলিম কবিরাই প্রথম বাংলা ভাষায় লৌকিক কাব্য ও প্রণয়নমূলক কাব্য সৃষ্টি করেন। অনেক ক্ষেত্রে এ রচনাগুলো কল্পনাপ্রস্তুত ছিল তথাপি সম্পূর্ণ বাস্তবতাবর্জিত ছিল না। এছাড়া এ কাব্যগুলো এমনভাবে সাধারণ জনগণের মনের রস সঞ্চার করতে সক্ষম হয় যে, তা একেবারেই বাস্তবতার সামিল হয়ে উঠে ।
সুলতানি আমলে রোমাঞ্চমূলক প্রণয়োপাখ্যান রচনায় মুসলিম কবিদের অবদান : নিম্নে সুলতানি আমলে রোমাঞ্চমূলক প্রণয়োপাখ্যানসমূহ রচনায় মুসলিম কবিদের অবদান তুলে ধরা করা হলো :
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উন্নতিতে সুলতানি আমলে মুসলমান কবিদের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিভাশালী মুসলমান কবি শাহ মুহম্মদ সগীর তাঁর ‘ইউসুফ জুলেখা’ রচনা করেন। বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রণয়নমূলক কাব্য। কাব্যটি ফার্সি রচনার বাংলা অনুবাদ। সুলতানি আমলে আরো কয়েকজন কবি ফার্সি কাব্যের অনুবাদ করেছেন। তাদের মধ্যে দৌলত উজির, বাহরাম খান উল্লেখযোগ্য। দৌলত উজির রচিত প্রেমের উপাখ্যান ‘লায়লী-মজনু’ বাংলা সাহিত্যে একটি বিশেষ সংযোজন। দোনা গাজির ‘সাইফ-উল-মূলক’ আরেকটি উল্লেখযোগ্য রচনা। উপরিউক্ত মুসলিম করিগণ প্রস্ফুটিত করেছিলেন। সাহিত্যের অঙ্গণে মুসলমান কবি ও লেখকদের নবতর চিন্তাধারার অনুপ্রবেশ বাংলা সাহিত্যের গৌরব ও মর্যাদাকে বৃদ্ধি করেছিল।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলার স্বাধীন সুলতানি আমলে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উন্নয়নে ঐকান্তিক চেষ্টা পরিলক্ষিত হয়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অগ্রগতিতে মুসলমানদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমণ্ডিত। মুসলিম কবিরাই প্রথম লৌকিক বা মনুষ্য বিষয়ক কাব্য রচনা করেন।
আর এ কাব্যগুলো এতটাই মানুষকে আকৃষ্ট করেছে যে, এ কাব্যগুলোকে সাধারণ মানুষ সম্পূর্ণ বাস্তব ভাবতে শুরু করেও নিজেদের অংশে রূপে ভালোবেসে মনে গেঁথে নেয়।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%9a%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%bf-%e0%a6%86/