উত্তর : ভূমিকা : সুলতানি আমলে সামাজিক অবস্থা ছিল চমকপ্রদ । বাংলাকেন্দ্রিক সুলতানি আমলও তার ব্যতিক্রম ছিলনা। বাংলার মানুষ ভ্রাতৃত্ব বোধে আবদ্ধ ছিল। তবে সুলতানি আমলে বাংলায় ইসলামের সাম্য ও বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের বদৌলতে নিজস্ব মেধার গুণে নিম্ন পর্যায়ের ব্যক্তি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ লাভ করতো। এসময় ইবনে বতুতা বাংলা সফর করেন। তিনি বাংলাকে ধনসম্পদে পরিপূর্ণ বলে আখ্যা দিয়েছেন। এসময় মুসলিমরাসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থানে ছিল। সুলতানি আমলে বাংলায় মুসলমানদের অবস্থান নিম্নে তুলে ধরা হলো :
→ সুলতানি আমলে বাংলায় মুসলমানদের অবস্থা : সুলতানি আমলে ইসলাম ধর্মাবলম্বী সব ব্যক্তি ভ্রাতৃত্ববোধে আবদ্ধ ছিল। তবুও বাস্তবক্ষেত্রে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক বিভেদ বর্তমান ছিল। তুর্কি, ইরানি, আফগানিরা নিজেদেরকে বিজেতা ও শাসক জাতি বলে দাবী করতো। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিমদেরকে তারা নীচ চোখে দেখতো। বিজেতা ও শাসক জাতি হিসেবে তুর্কিরা ১৩ শতক পর্যন্ত একচ্ছত্র ক্ষমতা ভোগ
করে। এযুগে পেশা ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ভিত্তিতে মুসলিম সম্প্রদায় বিভিন্ন শ্রেণতে বিভক্ত ছিল। যেমন-
১. অভিজাত সম্প্রদায় : অভিজাত সম্প্রদায় সমাজে উঁচু স্থানের অধিকারী ছিলেন।
২. আলেম শ্রেণি : আলেম শ্রেণি ছিল বিশিষ্ট ধর্মীয় শ্রেণি। তারা শ্রদ্ধার পাত্র এবং সমাজে তাদের যথেষ্ট প্রভাব ছিল ।
৩. সাধারণ শ্রেণি : দোকানদার, কারিগর, দর্জি ও কৃষক শ্রেণি এ পর্যায়ের ছিলেন। সাধারণ শ্রেণির অনেকে রাজকীয় কারখানাতে কাজ করতেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতানি শাসনামলে আলেম শ্রেণি বিশেষ প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিল। তবে মুসলিম জাতির মধ্যে বহুদাবিভক্তি ছিল। সাধারণ মুসলিমরা খুব বেশি সুবিধা ভোগ করতে পারেননি। তবে কোনো মুসলিম নির্যাতিত বা অবহেলিত হননি। প্রত্যেকেই তার মৌলিক অধিকার পেয়েছেন। মুসলিমদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ছিল।
এজন্য দিন দিন তারা পশ্চাদপদ হয়ে পড়েছিলেন।