উত্তর : ভূমিকা : শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের শাসনামলে বাংলায় শুধু মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তার লাভ করেনি, ইসলাম প্রচারও বৃদ্ধি
পায়। তার সময় মুসলিম রাজ্য সঠিক বিস্তৃতি লাভ করে। বাংলার মুসলিম শাসন বিস্তারে ফিরোজ শাহের অবদান অপরিসীম।
শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের পরিচয় : সুলতান শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের বংশ পরিচয় নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে । ইবনে বতুতা বলেন শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহ
বুখরা খানের পুত্র ছিলেন, টমাস ও রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে শামসুদ্দিন বলবলেন বংশধর। ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দিন
বারানির বর্ণনায় দেখা যায় শামসুদ্দিন নামে বুখরা খানের একজন দবির ছিলেন। আমির খসরুর বিবরণে দেখা যায় যে শামসুউদ্দিন
দবির সবসময় বুখরা খানের সাথে থাকতেন। ড. আব্দুল করিমের মতে, এই শামসুদ্দিন দবিরই কায়কাউসের সময় বিহারের গভর্নর
নিযুক্ত হন এবং তিনিই সুলতান কায়কাউসের স্বাভাবিক মৃত্যু কিংবা নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর ১৩০১ সালে লখনৌতির সিংহাসনে আরোহণ করেন। বিজেতা হিসেবে শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহ : শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের সময় বাংলাদেশে মুসলমান রাজ্য সর্বাধিক বিস্তার লাভ করে। তিনি স্থায়ীভাবে হুগলিকে গৌড় রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। শামসুউদ্দিন ফিরোজ শাহ সোনারগাঁও অঞ্চলে স্থায়ীভাবে
মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৩৩১ সালে সাতগাঁও অঞ্চল জয় করেন। তিনি ময়মনসিংহ, রাঢ় ও সিলেট জয় করেন।
শাসক হিসেবে শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহ : ফিরোজ শাহ একজন প্রজাহিতৈষী শাসক ছিলেন। সেচ কাজের জন্য খাল খনন করেন। দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ফিরোজ শাহের অবদান অনেক। একজন সংস্কৃতিবান মানুষ হিসেবে ফিরোজ শাহ শিক্ষা সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন।
ফিরোজ শাহ একজন ধর্মভীরু মুসলিম ছিলেন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলার ইতিহাসে সুলতান ফিরোজ শাহ এক গৌরবোজ্জল অধ্যায়ের সূচনা করেন।
তিনি ছিলেন একজন শ্রেষ্ঠ শাসক। বাংলার মুসলিম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা বিস্তারে শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের অবদান বাংলার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।


