উত্তর ভূমিকা : বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের কৃতিত্ব চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ফখরুদ্দিন
মোবারক শাহ সোনারগাঁয়ের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বাংলায় স্বাধীন সুলতানি যুগের সূত্রপাত করেন। ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের
শাসনামলে বাংলার জনগণ স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করেন।
সোনারগাঁয়ের স্বাধীন সুলতান হিসেবে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ : স্বাধীন বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের নাম বিশেষভাবে স্মরণীয়। সোনারগাঁওয়ের স্বাধীন সুলতান হিসেবে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের কৃত্বিত্ব নিম্নে তুলে ধরা হলো :
১. স্বাধীন সুলতানি যুগের উদ্ভব : ১৩৩৮ সালে বাংলার শাসনকর্তা বাহরাম খানের মৃত্যুর পর ফখরুদ্দিন সোনারগাঁওয়ের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তার স্বাধীনতা ঘোষণার সাথে সাথে বাংলাদেশে স্বাধীন সুলতানি যুগের সূচনা হয়।
২. সোনারগাঁও বিজয় : ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ কদর খানকে পরাজিত ও নিহত করেন। কদর খানকে হত্যা করার পর সোনারগাঁও স্বাধীন সুলতানী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। কদর খানের ধন-সম্পদ তিনি লাভ করেন।
৩. চট্টগ্রাম বিজয় : ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ সোনারগাঁও হতে চট্টগ্রামে অভিযান করেন এবং চট্টগ্রাম দখল করেন। তিনি চাঁদপুর হতে চট্টগ্রাম পর্যন্ত একটি রাজপথ নির্মাণ করেছিলেন।
৪. সোনারগাঁওয়ের উন্নতি সাধন : সুলতান ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ একজন দক্ষ শাসক ছিলেন। তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাংলার রাজধানী সোনারগাঁওয়ের উন্নতি ও শ্রীবৃদ্ধি হয়। তিনি সুন্দর সুন্দর অট্টালিকা নির্মাণ করে শহরকে সুসজ্জিত করেন।
৫. প্রজাকল্যাণ : সুলতান ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ একজন প্রজাকল্যাণকামী শাসক ছিলেন। রাজ্যের প্রজাসাধারণের দুঃখ, কষ্ট লাঘবের জন্য তিনি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট,
সরাইখানা ও সেতু নির্মাণ করেন।
৬. সুশাসন প্রতিষ্ঠা : শাসক হিসেবে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দেন। তিনি স্বীয় যোগ্যতা ও প্রতিভা দ্বারা স্বল্প সময়ের মধ্যে রাজ্যের সকল প্রকার বিশৃঙ্খলা
দূর করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলায় স্বাধীন সুলতানি যুগের শুরু ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের সোনারগাঁওয়ের ক্ষমতা
দখলের মাধ্যমে। তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান। তিনি একজন বিচক্ষণ সেনাপতি ও যোগ্য শাসক ছিলেন। তার
প্রচেষ্টায় সোনারগাঁওয়ের উন্নতি ও শ্রীবৃদ্ধি সাধিত হয়।


