উত্তর : ভূমিকা : মধ্যযুগে বাংলায় মুসলিম শাসনামলের বহু স্থাপত্য নিদর্শন আছে। এসকল স্থাপত্য নিদর্শনগুলো তৎকালীন
সময়ের শাসকদের অর্থনৈতিক অবস্থা ও রুচির বহিপ্রকাশ। মধ্যযুগের সুলতানি আমল ও মুঘল শাসনামল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মুঘল শাসনামলেও সুলতানি আমলের মত বাংলায় স্থাপত্য শিল্প গড়ে তোলা হয়। এসময় যদিও দিল্লি কেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা
ছিল। বাংলা অনেক সময় স্বাধীনতা ঘোষণা করতো। তথাপি এ বংশদ্বয়-এর কর্তৃত্ব বা আধিপত্য বাংলার শাসকগণ মেনে
চলতো। যার ফলে বাংলায় সুলতানি ও মুঘল বৈশিষ্ট্যের স্থাপত্য শিল্প গড়ে ওঠে।
মধ্যযুগে বাংলার স্থাপত্য নিদর্শন : সুলতানি আমলে স্থাপত্যের অন্যতম উদাহরণ ছিল ধর্মীয় ইমারত। সুলতানি আমলে অনেক মসজিদ নির্মাণ করা হয়। যা আজও বাংলার
গৌরবকে স্মরণ করিয়ে দেয়। সুলতানি আমল ও মুঘল আমলের স্থাপত্যের নির্মাণশৈলী, অলঙ্করণ ও ব্যবহৃত নির্মাণ উপকরণ থেকে সমকালীন সমাজের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও
অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ, বড়-কাটরা, ছোট কাটরা, আদিনা
মসজিদ, সোনা মসজিদ, লালবাগ কেল্লা, কদমরসূল, চিকা মসজিদ, একলাখী মসজিদ প্রভৃতি স্থাপত্যগুলো মধ্যযুগে ও
মুঘল আমলে নির্মিত। এসব স্থাপত্যশিল্প-র গঠনশৈলী, কারুকার্য, গঠন উপাদান প্রভৃতি তৎকালীন শাসকদের রুচি, অর্থনৈতিক অবস্থা, প্রাচুর্য, প্রযুক্তি প্রভৃতি বিষয়ের নিদর্শন
স্বরূপ। স্থাপত্যসমূহ তৎকালীন সময়ের শাসকদের সম্পর্কে অবহিত করার উপকরণ বিশেষ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মধ্যযুগের গুরুত্বপূর্ণ দুটি রাজবংশের শাসন হলো মুঘল ও সুলতানি আমল। এসময়ে বাংলায় বেশ কিছু স্থাপত্য শিল্প গড়ে উঠে যা তাদের ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে কাজ করে। বর্তমানেও এসব স্থাপত্যকলাগুলো তাদের কৃত্বির স্বাক্ষর বহন করে চলেছে।
কোনটা ধ্বংসপ্রাপ্ত তবে বিদ্যমান। আবার, কোনটা মাথা উঁচু করে আজও দাড়িয়ে ঐ বংশদ্বয়ের মর্যাদাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে চলেছে।