মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাসের অলিখিত উৎসসমূহ লিখ।

উত্তর : ভূমিকা : মধ্যযুগের ইতিহাস জানার মৌলিক উপাদান আছে গোটা কয়েক। নির্ভরযোগ্য ইতিহাস রচনার জন্য প্রত্যক্ষ বা
মৌলিক উপাদান প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে বাংলার ইতিহাস জানার জন্য প্রত্যক্ষ উপাদান হিসেবে মুদ্রা ও শিলালিপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রাখে । এ উপাদান হতে তৎকালীন সময়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় শাসন ও অবস্থা সম্পর্কে জানা যায় ।
মধ্যযুগের সুলতানি আমলে বাংলার ইতিহাসের অলিখিত
উৎসসমূহ : বাংলার ইতিহাসের অলিখিত উৎসসমূহ হচ্ছেঃ
১. শিলালিপি : পাথর বা শিলাখণ্ডে উৎকীর্ণ বাণী বা তথ্যকে শিলালিপি বলে । এটি মূল্যবান ঐতিহাসিক উপাদান। শিলালিপি হতে
কোরআনের আয়াত, হাদীস, সুলতানের নাম, পরিচয়, শিলালিপি উৎকীর্ণকারীর নাম, পরিচয়, উৎকীর্ণের সময় বা তারিখ জানা যায়। এছাড়া রাজ্যের সীমানা, রাজ্য জয়, সুলতানের জন্ম ও মৃত্যু সাল জানা যায় । বঙ্গে মুসলিম শিলালিপি পাওয়া গেছে। এসকল শিলালিপি মসজিদ ও সমাধিগাত্রে আরবি ও ফারসি ভাষায় লেখা।
২. মুদ্রা : ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে মুদ্রা অনস্বীকার্য । এটি হতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক চিত্র বুঝা যায়। মুদ্রার
সাহায্যে সুলতানের রুচি, ধর্মীয়নীতি, টাকশালের নাম, সুলতানের নাম, তারিখ জানা যায়। আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহ ইখতিয়ার
উদ্দিন গাজি শাহের নাম মুদ্রা থেকে জানা যায়। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় এ পর্যন্ত ২৬ জন নামাঙ্কিত মুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে।
৩. স্থাপত্য নিদর্শন : স্থাপত্য নিদর্শন সুলতানের রুচি, আর্থিক সচ্ছলতা, শিল্পে নানা দেশের প্রভাব, শিল্প ও শিল্পের উৎকর্ষতা
সম্পর্কে জানায়। মসজিদ, মন্দির, অট্টালিকা, সমাধিসৌধর উপর উৎকীর্ণ লিপি দ্বারা বিভ্রান্তিকর সন-তারিখ সমাধান করা যায়। বাংলায় সুলতানি আমলের ও মোঘল আমলের আদিনা মসজিদ, দাখিল
দরওয়াজা (গৌড়), বড় ও ছোট সোনা মসজিদ, লালবাগ কেল্লা, খান জাহানের ষাট গম্বুজ মসজিদ স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন।
উপসংহার : নির্ভুল নির্ভরযোগ্য ইতিহাস রচনার জন্য ইতিহাসের সব উপাদানের মত অলিখিত উপাদানও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই সঠিক নির্ভুল ইতিহাস রচনায় অলিখিত উপাদান গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a5%e0%a6%ae-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ae%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%97%e0%a7%87-%e0%a6%ac/