উত্তর : ভূমিকা : ইতিহাস তথ্য নির্ভরশীল। মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাস জানার জন্য সঠিক কোন উপাদান পাওয়া যায় না। এজন্য আমরা বিদেশি পর্যটকদের বিবরণীর উপর অধিক নির্ভরশীল। সমসাময়িক বিদেশি ‘পর্যটকদের বিবরণীতে বাংলা সম্পর্কে জানা যায়। তাই মধ্যযুগ বাংলার ইতিহাস জানার জন্য এসকল বিদেশি পর্যটকদের বিবরণী অত্যন্ত মূল্যবান।
→ বিদেশি পর্যটকদের বিবরণী : মধ্যযুগে ইতিহাস সুস্পষ্ট তথ্যবহুলভাবে জানার জন্য অন্যতম যে এক মাধ্যম সেটা হলো বিদেশী পর্যটকদের বিবরণ। নিম্নে বাংলার ইতিহাসের উৎস হিসেবে বিদেশী পর্যটকদের বিবরণ প্রদান করা হলো-
১. ইবনে বতুতা : মরক্কোর পর্যটক আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ ওরফে ইবনে বতুতা ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের
শাসনামলে ১৩৪৫-১৩৪৬ সালে বাংলায় আসেন। তার “রেহালা-ই-ইবনে বতুতা” গ্রন্থে সমসাময়িক বাংলার আর্থ- সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা আছে।
২. মহুয়ান : সুলতান গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের শাসনামলে চীনা দূত মহুয়ান চীনা প্রতিনিধিদের সাথে বাংলায় আসেন। তিনি বাংলার আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য রচনা করে গেছেন ।
৩. ভাস্কো-দ্যা-গামা : অজানাকে জানা, অচেনাকে চেনা যার ছিল নিত্য নৈমিত্তিক সখ। যে ব্যক্তি কি-না অনেক অজনায় জয় করেছেন শুধুমাত্র তার প্রবল ইচ্ছা শক্তির কারণে সেই মহান পরিব্রাজক ভাস্কো-দ্যা-গামা বাংলার ইতিহাসের যে সকল তথ্য
রেখে গেছেন তা থেকে বাংলার ইতিহাস রচনায় বাংলা তথ্য পেয়ে থাকি। এসব তথ্য দ্বারা আজ বাংলা ইতিহাস সমৃদ্ধ ।
৪. অন্যান্য বিদেশি পর্যটকদের বর্ণনা : ইতালির ভেনিসের অধিবাসী নিকোলো দি কান্তি, পর্তুগিজ নাবিক ইতালীয় বণিক বারথেমা, বারবোসা, জোয়াও-ডি-বেরেস, সিজার, ফ্রেডারিক, তোনে পিচবুস,
ইউরোপীয় পর্যটক মানুচি, তেভার্নিয়াম ও বার্নিয়াম এ উপমহাদেশে আসেন। তাদের রেখে যাওয়া বর্ণনা আমাদের ইতিহাস জানার উৎস।
উপসংহার : উপরিউক্ত বর্ণনা শেষে আমরা একথা বলতে পারি যে, তৎকালীন বাংলায় নির্ভরযোগ্য বিশেষ উপাদান ছিল না, যা থেকে আমরা মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাস জানতে পারি। তাই বিদেশি পর্যটকদের লিখিত বর্ণনাগুলোকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যরূপে মূল্যায়ন করে থাকি ।