উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ মানবসৃষ্টির ইতিহাস লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, মানুষ একটি প্রতিকূল পরিবেশে জন্মগ্রহণ করে। প্রতিকূলতা ও বৈরী পরিবেশের মধ্য দিয়েই যে ধীরে ধীরে বড় হয় ও স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্থ হয়ে উঠে। মাঝে মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতিতে এ অবস্থার অবনতি হয়। তাই সরকার এ অবস্থার উত্তরণে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণ করে। যার মধ্যে সামাজিক বিমা অন্যতম বলে বিবেচিত হয়। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের কল্যাণের নিমিত্তেই এটি পরিচালিত হয়।
সাধারণ অর্থে : সাধারণ অর্থে দুর্দশাপূর্ণ ও আর্থিক সংকটময় অবস্থায় ব্যক্তি মানুষকে সাহায্য ও কল্যাণের পথে ধাবিত করার কর্মসূচিকে সামাজিক বিমা বলা যেতে পারে।
→ সামাজিক বিমা ঃ কর্মরত শ্রমিক- কর্মচারী কর্মকর্তাদের জন্য সামাজিক বিমা এক গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা কর্মসূচি। সামাজিক বিমা হচ্ছে সেই সুবিধাদি যা দরিদ্র অসহায় শ্রমিক ও কর্মচারীদের বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা থেকে মুক্তিদানের লক্ষ্যে প্রদান করা হয়ে থাকে। এই সামাজিক বিমার ধারণাটি প্রথম ব্যবহৃত হয় শিল্প বিপ্লবোত্তর ইংল্যান্ডের সমাজে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীই এ সুযোগ পেয়ে থাকে।
→ প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
R. C. Saxena বলেছেন, সামাজিক বিমা এমন এক পদ্ধতি, যা ব্যক্তিকে দারিদ্র্য ও দুর্দশায় নিক্ষিপ্ত হবার হাত থেকে রক্ষা করে এবং জরুরি সময়ে সহায়তা করে।
ফ্রিডল্যান্ডর ও এপটি বলেন, আধুনিক সামাজিক বিমার প্রতিষ্ঠা বিমাকৃত কর্মচারী ও তাদের পরিবারকে শিল্পসমাজের বহুবিধ অপ্রত্যাশিত ঘটনা থেকে রক্ষাকল্পে। সুতরাং, সামাজিক বিমা হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার সেই দিক। যা কোনো ব্যক্তি স্বীয় সামর্থ্য ও দূরদৃষ্টির সাহায্যে শর্তপূরণ সাপেক্ষে নিজেকে তার পরিবারকে ভবিষ্যৎ আর্থিক বিপর্যয়ের প্রাক্কালে আর্থিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। সমাজের অসহায়, অবহেলিত ও অক্ষম মানুষের জন্য সামাজিক বিমা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার : পরিশেষে বলতে পারি যে, সামাজিক বিমা অফিস-আদালত, শিল্প-কারখানার অগণিত শ্রমিক- কর্মকর্তাদের কল্যাণের নিমিত্তে পরিচালিত এক প্রকার নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি। শিল্প ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে সামাজিক বিমার প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।