রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাংগঠনিক কাঠামো লিখ ।

উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে জর্জরিত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও দুঃস্থ মানবতার সেবায় বহুমুখী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির লক্ষ্যপূরণের জন্য বিশেষ কিছু প্রশাসনিক কাঠামো লক্ষ্য করা যায়। এই প্রশাসনিক কাঠামোর উপর ভিত্তি করেই মূলত এই সমিতি
পরিচালিত হয়।
→ বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রশাসনিক কাঠামো ঃ নিম্নে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রশাসনিক
কাঠামো দেওয়া হলো :
১. প্রেসিডেন্ট (President) : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি পদাধিকারবলে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রেসিডেন্ট বা সভাপতি।
২. চেয়্যারম্যান (Chairman) : সোসাইটির প্রেডিডেন্ট ৩ বছর মেয়াদের জন্য চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন। চেরারম্যান পর পর দুই মেয়াদের জন্য নিযুক্ত হতে পারেন।
৩. সাধারণ পরিষদ ঃ সোসাইটির সাধারণ পরিষদ হচ্ছে, সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পরিষদ। ইউনিট নির্বাহী পরিষদ হতে ২ জুন নির্বাচিত ডেলিগেট, চেয়ারম্যান কোষাধ্যক্ষ, ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সকল সদস্য ও প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সমাজকল্যাণ ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে ১ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে সাধারণ
পরিষদ গঠিত হয়। সাধারণ পরিষদ প্রতিবছর একবার বার্ষিক সাধারণ সভায় বার্ষিক প্রতিবেদন ও বার্ষিক বাজেট অনুমোদন করে । তাছাড়া যে বছরে ব্যবস্থাপনা পর্ষদের নির্বাচন তাকে বার্ষিক সাধারণ সভায় উক্ত নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন করা হয়।
৪. ব্যবস্থাপনা পর্ষদ ঃ সাধারণ পরিষদের পক্ষে সার্বিক কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনার জন্য ব্যবস্থাপনা পর্ষদ গঠন করা হয়। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কোষাধ্যক্ষ ও ১২ জন সদস্যসহ ব্যবস্থাপনা পর্ষদ ১৫ সদস্য বিশিষ্ট। সোসাইটির মহাসচিব ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ব্যবস্থাপনা পর্ষদের কার্যকাল তিন বছর।
৫. ইউনিট ঃ রেডক্রিসেন্ট এর আদর্শ ও উদ্দেশ্য বিস্তার এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যক্রমকে সারাদেশে পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি প্রশাসনিক জেলায় একটি করে ইউনিট গঠিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মোট ৬৮টি ইউনিট রয়েছে। ইউনিটের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিটি ইউনিটে একটি ১ সদস্য বিশিষ্ট ইউনিট নির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়।
৬. সচিবালয় ঃ বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রশাসনিক ও দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি সচিবালয় হিসেবে সকল কার্যক্রম সম্পাদন করে। সমিতির সচিবালয়ের প্রধান মহাসচিবকে নিয়োগ দেয় ব্যবস্থাপনা পর্ষদ । সচিব ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সচিব। ব্যবস্থাপনা পর্ষদ অবশ্য একজন উপ-মহাসচিব নিয়োগ দেয়। যিনি মহাসচিবের
অনুপস্থিতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে।
উপসহাহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রশাসনিক কাঠামো সমিতির উন্নয়নমূলক
কর্মকাণ্ডে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে প্রশাসনের পদে নিয়োগ দেয়া হয়। তাদের সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি দিন দিন বিস্তৃতি লাভ করছে।