উত্তর : ভূমিকা ঃ বাংলাদেশে কিশোর অপরাধের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ফলে সমাজে সৃষ্টি হচ্ছে অশান্তি। কিশোর
চারিত্রিক সংশোধনের লক্ষ্যে কিশোর আদালত গঠন করা হয়ে থাকে। এটি সাধারণত ঘরোয়া পরিবেশে পরিচালিত হয়।
এই কিশোর আদালত অপরাধ সংশোধনে এক নবতর ও অভিনব সংযোজন। তাই এর ভূমিকা অত্যন্ত ব্যাপক বলে প্রতীয়মান হয় ।
কিশোর আদালত ঃ কিশোর আদালত কিশোর-কিশোরীদের অপরাধ সংশোধনে গঠিত এক বিশেষ আদালত। বিশ্বে সর্বপ্রথম নেপোলিয়ন কিশোর আদালতের চিন্তা-ভাবনা করেন। পরবর্তীতে ১৮৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে কিশোর আদালত স্থগিত হয়। এর উদ্যোক্তা ছিলেন জন এডামস। শাস্তি নয়, অপরাধের কারণ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও
অন্যান্য বিষয় বিবেচনাপূর্বক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অপরাধীর সংশোধন ও পুনর্বাসনই এর লক্ষ্য। সংশোধনমূলক কার্যক্রমে এটির গুরুত্ব বেড়েই চলেছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় শহরে কিশোর অপরাধ দমনে এই ধরনের আদালত
প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাংলাদেশে শিশু আইন, ১৯৭৪-এর ৩ নং ধারা অনুযায়ী কিশোর আদালত গঠিত হয়ে থাকে। এতে একজন ১ম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মচারী নিয়ে এ আদালত অগ্রসর হয়। আর এখানে একান্ত ঘরোয়া পরিবেশ ১৮ বছরের নিচে কিশোরদের অপরাধের বিচার করা হয়। বিচারকার্যে অপরাধী, তার মাতাপিতা, আত্মীয়-স্বজন, সমাজকর্মী, শিক্ষক প্রমুখ উপস্থিত থাকতে পারেন। তবে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারেন। ফলশ্রুতি কিশোরদের
চরিত্রগত সংশোধন দ্রুত ত্বরান্বিত হয়। এছাড়াও এতে অভিযোগ উপস্থাপন বা খণ্ডনের সুযোগও থাকে না। এছাড়াও
প্রয়োজনে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়ে থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কিশোর আদালত এদেশের কিশোরদের চারিত্রিক অবগতি ঠেকানোর নিমিত্তে পরিচালিত হয়ে থাকে। কিশোরদের উন্নয়ন মানেই জাতির ভবিষ্যৎ উন্নত। তাই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে কিশোর আদালতের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি বলে গণ্য হয়।