উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ সবার জন্য স্বাস্থ্য এ মৌলিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। স্বাস্থ্যনীতির মূল্য লক্ষ্য হচ্ছে ব্যয় সাশ্রয়ী বা Cost-effective উপায়ে অধিক জনগণকে সর্বোত্তম স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করা। আরোগ্যমূলক ও পুনবার্সন সেবাগুলোর সন্তোষজনক প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
→ কর্মকৌশলসমূহ ঃ জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি বাস্তবায়নে কর্মকৌশলগুলো নিম্নে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো :
১. স্বাস্থ্যনীতির সঠিক বাস্তবায়ন ও প্রয়োগের জন্য রাজনৈতিক সমর্থনসহ সকলের সম্মতি ও সদিচ্ছা প্রয়োজন, যা আর্থ- সামাজিক এবং রাজনৈতিক উন্নয়ন সাধনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
২. যেহেতু স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা সার্বজনীনভাবে গৃহীত! সেহেতু এ পদ্ধতিতে ব্যাপক ব্যয় সাশ্রয়ী বা Cost effective স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যাকে মূল উপাদান হিসেবে জাতীয়
স্বাস্থ্যনীতিতে গ্রহণ করা হবে।
৩. স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা পূরণের জন্য স্বাস্থ্যনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ওষুধ নীতিকে আরও গ্রহণযোগ্য এবং উন্নত
করতে হবে।
৪. রোগ ব্যাধির বিস্তৃতির গতিবিধি ঘনিষ্ঠ নজরদান পদ্ধতিকে রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য কর্মসূচির সাথে সমন্বয় সাধন করতে হবে।
৫. প্রত্যেক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রোগীর পরিচর্যার ক্ষেত্রে মানসম্মত সেবা নিশ্চিতকরণের মূলনীতি অনুসরণ করা হবে। এ লক্ষ্যে প্রত্যেক স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্বাস্থ্যসেবার গুণগত মান নিশ্চিতকরণ, মনিটরিং ও মূল্যায়ন পদ্ধতির উপর একটি সহায়িকা সরবরাহ করা হবে।
৬. স্বাস্থ্যবিষয়ক মানব সম্পদের জ্ঞান ও দক্ষতার সর্বোচ্চ সুফল অর্জনের জন্য সর্বস্তরের জন্য একটি সঠিক ও চাহিদা মাফিক স্বাস্থ্যবিষয়ক মানব সম্পদ উন্নয়ন পদ্ধতি গড়ে তোলা।
৭. সর্বস্তরে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে জনগণ ও স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করা হবে।
৮. একটি সমন্বিত তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এবং কম্পিউটার যোগাযোগ ব্যবস্থা সারাদেশে প্রতিষ্ঠা করা হবে। যা কর্মসূচি বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে এবং মনিটরিং এর জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
৯. মেডিকেল প্র্যাকটিশনারদের রেজিস্ট্রেশন পেশাগত মান এবং অথিক্যাল প্র্যাকটিস সংক্রান্ত বিষয়গুলো বাড়াবাড়িভাবে তদারকি করার জন্য বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (BMDC) রূপরেখা পুনর্গঠন এবং
আরও শক্তিশালী করা আবশ্যক।
১০. প্রয়োজনের ভিত্তিতে (Need based) চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আরও গণমুখী এবং যুগোপযোগী করতে হবে।
১১. ডাক্তারিদের ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক বিষয়ের উপর যথোপযুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
১২. সুষ্ঠু স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে মেডিক্যাল কলেজ ও প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোর ব্যবস্থাপনার উন্নত
সাধন করা হবে।
১৩. স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকাণ্ডের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে পুষ্টি ও স্বাস্থ্য শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হয়।
১৪. সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের একটি ন্যূনতম ফি নেয়ার ব্যবস্থা থাকতে কিন্তু দরিদ্র ও অক্ষম রোগীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকবে।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির আলোকে উপরিউক্ত কৌশলসমূহ যথাযথভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হলে সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।