উত্তর। ভূমিকা ঃ প্রায় দুই শতাব্দী আগে শিল্প বিপ্লবের কারণে সভ্যতার গতিপ্রকৃতি পরিবর্তিত হয়েছিল। একুশ শতকে তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লবের ভেতর দিয়ে আবার সেই গতি প্রকৃতি পরিবর্তিত হচ্ছে। তথ্য-প্রযুক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার করে সর্বক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব। রাষ্ট্র পরিচালনার স্বচ্ছতা এনে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করার ক্ষেত্রেও তথ্য-
প্রযুক্তির অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিম্নরূপ ঃ
১. উপযুক্ত কর্মকাণ্ডের জন্য তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষার আন্তর্জাতিক মান ও গুণসম্পন্ন শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত জনবল তৈরির প্রচেষ্টা চালানো ।
২. তথ্য-প্রযুক্তিকে শুধুমাত্র কম্পিউটার বিজ্ঞানের মাঝে সীমিত না রেখে মোবাইল ফোন, রেডিও, টেলিভিশন, নেটওয়ার্কিং সকল তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণকে ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ ।
→ কৌশলঃ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার কৌশলসমূহ নিম্নে দেওয়া হলো-
১. শিক্ষার একেবারে প্রাথমিক স্তর থেকে কম্পিউটারকে শিক্ষাদানের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
২. মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রবেশের পূর্বেই সকল শিক্ষার্থীকে কম্পিউটার বিষয়ে শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
৩. মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ের সঙ্গে কম্পিউটার বিষয় নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়া হবে।
৪. বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার গ্রাফিক ডিজাইন, মাল্টিমিডিয়া, অ্যানিমেশন, ক্যাড (সিএডি) সিএসএম ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হবে।
৫. তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তি অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হবে।
→ উচ্চশিক্ষা ঃ
১. সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মানের কারিকুলামসহ কম্পিউটার বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ খোলা হবে। এ
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষার মান যুপযোগী করে শিক্ষার্থীদের স্বতন্ত্রভাবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করার ব্যবস্থা করা হবে।
৩. বিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে পরীক্ষা পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করে তথ্যপ্রযুক্তি জনবলে সম্পৃক্ত হবার সুযোগ করে দেয়া। প্রয়োজনে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
৪. বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র গড়ে তোলা হবে।
৫. উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রকৃত অর্থে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
৬. ২০১৩ সালের মধ্যে সকল স্নাতক ডিগ্রিধারী যেন কম্পিউটার ব্যবহারের মৌলিক দক্ষতা অর্জন করতে পারে ব্যবস্থা করা হবে ।
উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে, তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি সরবরাহসহ সম্ভাবনাময় রপ্তানিখাত হিসেবে সফটওয়ার ডাটা প্রসেসিং বা কলসেন্টার জাতীয় Service industry বিকাশে আলোদাভাবে গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে। এই তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের অংশীদার হয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দারিদ্র্য বিমোচনের একটি অভাবিত সুযোগ পেয়েছে।