উত্তর ঃ শিশুদের জন্য আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু করার আগে শিশুর অন্তর্নিহিত অপার বিস্ময়বোধ, অসীম কৌতূহল, আনন্দবোধ ও অফুরন্ত উদ্যমের মতো সার্বজনীন মানবিক বৃত্তির সুষ্ঠু বিকাশ এবং প্রয়োজনীয় মানবিক ও দৈহিক প্রস্তুতি গ্রহণের পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। তাই তাদের জন্য বিদ্যালয় প্রস্তুতিমূলক প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা জরুরি। অন্যান্য শিশুর সঙ্গে একত্রে এই প্রস্তুতিমূলক শিক্ষা শিশুর মধ্যে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টিতে সহায়ক হবে। কাজেই ৫+ বছর বয়স্ক শিশুদের জন্য প্রাথমিকভাবে এক বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হবে।
পরবর্তীকালে তা ৪+ বছর বয়স্ক শিশু পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হবে। এই পর্যায়ে শিক্ষাক্রম হবে-
→ শিক্ষানীতির ক্ষেত্রে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ঃ বাংলাদেশের শিক্ষা নীতিতে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়টি অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । শিক্ষানীতিতে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়। শিক্ষা ও বিদ্যালয়ের প্রতি শিশুর আগ্রহ সৃষ্টিমূলক এবং সুকুমারবৃত্তির অনুশীলন। অন্যের প্রতি সহনশীলতা এবং পরবর্তী আনুষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য শৃঙ্খলাবোধ সম্পর্কে ধারণা লাভ।
→ কৌশলঃ
১, অন্যান্য গ্রহণযোগ্য উপায়ের সঙ্গে ছবি, রং, নানা ধরনের সহজ আকর্ষণীয় শিক্ষা উপকরণ, মডেল হাতের কাজের সঙ্গে ছড়া, গান, গল্প ও খেলার মাধ্যমে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হবে।
২. শিশুদের স্বাভাবিক অনুসন্ধিৎসা ও কৌতূহলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তাদের স্বাভাবিক প্রাণশক্তি ও উচ্ছ্বাসকে ব্যবহার করে আনন্দময় পরিবেশ, মমতা ও ভালোবাসার সঙ্গে শিক্ষা প্রদান করা হবে।
৩. প্রাক- প্রাথমিক শিক্ষার জন্য প্রতি বিদ্যালয়ের বাড়তি শিক্ষকের পদ সৃষ্টি ও শ্রেণিকক্ষ বৃদ্ধি করা হবে। তবে সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হওয়ার ধাপে ধাপে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
৪. মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় ধর্মমন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত সকল ধর্মের শিশুদেরকে ধর্মীয় জ্ঞান, অক্ষরজ্ঞানসহ আধুনিক শিক্ষা ও নৈতিকতা শিক্ষা প্রদানের কর্মসূচি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার অংশ হিসেবে গণ্য করা হবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জাতীয় শিক্ষানীতি ক্ষেত্রে প্রাক-প্রাথমিক, ‘ একটি জাতির উন্নয়নে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। মানবতার বিকাশ, জনমুখী নেতৃত্ব প্রদান, নীতিবান ও কুসংস্কারমুক্ত জাতি গঠন, মানব সম্পদ উন্নয়ন, শিক্ষার হার বৃদ্ধি প্রভৃতি শিক্ষায় মূল উদ্দেশ্য।
