উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ শিল্প বিপ্লবোত্তর সময়ে সমাজ ব্যবস্থা ক্রমশ জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠে। এ জটিল সামাজিক ব্যবস্থায় কোনো লক্ষ্যার্জন মোটেই সহজসাধ্য কোনো বিষয় নয়। ফলে আধুনিক সময়ে কোনো উদ্দেশ্যার্জনের পূর্বশর্ত হিসেবে ধরা হয় পরিকল্পনাকে। সামাজিক কোনো সমস্যা সমাধানে যেমন প্রয়োজন সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ তেমনি উন্নয়নেও প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
→ বাংলাদেশে সামাজিক নীতির প্রয়োজনীয়তা : বাংলাদেশে সামাজিক নীতির প্রয়োজনীয়তা নিম্নরূপ ঃ
১. সামাজিক সমস্যা মোকাবেলা : সামাজিক সমস্যা উন্নয়নে বাধার সৃষ্টি করে। তাই উন্নয়ন ঘটাতে হলে সামাজিক সমস্যা মোকাবেলা করা জরুরি। আর সামাজিক সমস্যা মোকাবেলা করতে হলে সামাজিক নীতি প্রণয়ন করা অত্যাবশ্যক।
২. সম্পদের সুষম বণ্টন ঃ সম্পদ দুই ধরনের হয়ে থাকে। বস্তুগত ও অবস্তুগত। সম্পদের সুষম বণ্টনের অভাবে সামাজিক সমস্যা বৃদ্ধিপায়। যা উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য সামাজিক নীতি প্রণয়ন করা জরুরি।
৩. মৌল মানবিক চাহিদা পূরণ ঃ বাংলাদেশে সামাজিক সমস্যার অন্যতম কারণ হলো মৌল মানবিক চাহিদা পূরণ না হওয়া। তাই মৌল মানবিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সামাজিক নীতি প্রণয়ন করা হয়।
৪. মানব সম্পদ উন্নয়ন ঃ মানব সম্পদের সাথে সম্পর্কিত খাতসমূহ যেমন- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যুবকল্যাণ, নারীকল্যাণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সামাজিক নীতি প্রণয়ন করে মানব সম্পদের উন্নয়ন সাধন করা যায়।
৫. সম্পদের সদ্ব্যবহার : সম্পদের সদ্ব্যবহার ব্যতীত জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। সম্পদের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমেই জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। তাই সম্পদের সদ্ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হলে সামাজিক নীতি প্রণয়ন করা জরুরি।
৬. অসামঞ্জস্যতা দূর করা ঃ সমাজের সমস্যা বৃদ্ধি পেলে অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়। এই অসামঞ্জস্যতা সমাজের উন্নয়নের গতিতে বাধা প্রদান করে। অসামঞ্জতা দূর করতে হলে সামাজিক নীতি প্রণয়ন করা জরুরি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শুধু বাংলাদেশে নয় বরং যেকোনো রাষ্ট্রের সামাজিক সমস্যা মোকাবেলা, অবাঞ্ছিত সামাজিক পরিস্থিতি দূর করা, বাঞ্চিত সামাজিক পরিবর্তন নিশ্চিতকরণ, সমাজের সকল শ্রেণির স্বার্থ সংরক্ষণ এবং এক কথায় সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সামাজিক নীতি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।