অথবা, গবেষণার ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র পদ্ধতির গুরুত্ব আলোচনা কর।
অথবা, গবেষণার ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র পদ্ধতির প্রভাব আলোচনা কর।
অথবা, গবেষণার ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র পদ্ধতির তাৎপর্য আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : “No survey can be better than its questionnaire” (C. Moser and G. Kalton). সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহের জন্য যে সমস্ত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় প্রশ্নপত্র বা Questionnaire method
তাদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে অতি কঠিন ও জটিল বিষয়ের তথ্য অতি সহজেই গ্রহণ করা যায়। কারণ এখানে উত্তরদাতাকে তথ্য প্রদান করতেই হয়। আর সরাসরি উপস্থিতির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে কাজ করা হয় বলে তথ্যের সভ্যতা ও যথার্থতা বজায় থাকে । নিম্নে এ পদ্ধতির সুবিধাগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হল ঃ
সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ কেন : তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতির ব্যাপক সুবিধা রয়েছে যা অধুনা গবেষণায় বহুল প্রচলিত। বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। নিম্নে এর ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরা হল :
১. পক্ষপাতিত্ব কম হয় : প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহের জন্য গবেষককে সরাসরি উপস্থিত থাকতে হয়। এখানে উত্তরদাতার সম্মুখে উপস্থিত থাকার কারণে কোন প্রকার পক্ষপাত করা হয় না এবং সঠিক ও যথার্থ তথ্য উত্তরদাতার থেকে প্রশ্ন করে বের করে নেওয়া হয়। যেমন- যদি প্রশ্ন করা হয় আপনার পরিবারে সদস্য সংখ্যা কত? এর উত্তরে সঠিক ও যথাযথ সংখ্যাটাই চলে আসবে।
২. দক্ষতার প্রয়োজন খুব বেশি হয় না : সামাজিক গবেষণায় ব্যবহৃত অন্যান্য পদ্ধতির মত প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে খুব বেশি দক্ষতার প্রয়োজন হয় না। এখানে খুব বেশি প্রশিক্ষণের দরকার হয় না এ কারণে যে, প্রশ্ন পূর্ব নির্ধারিত থাকে উত্তরদাতা সে অনুযায়ী তথ্য
প্রদান করে থাকে।
৩. ব্যয় কম হয় : প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য অন্যান্য পদ্ধতির চেয়ে খরচ কম হয়। কারণ এ পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহকারী সরাসরি উত্তরদাতার নিকটে না গিয়েও পোস্টাল ও পোস্টের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে
থাকেন। নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র থেকেই অফিসের মাধ্যমে সরবরাহ করা হলে উত্তরদাতা উত্তর লিখে ডাকযোগে প্রেরণ করতে পারেন। ফলে খরচ কম হয়। প্রেরণ করলে উত্তরদাতা অতি অল্প সময়ের মধ্যে তথ্যাবলি পাঠিয়ে দিতে পারেন। এখানে দূরত্ব যতই হোক সময়
৪. সময় কম লাগে : এ পদ্ধতিতে সময় অনেক কম লাগে। তথ্য সংগ্রহের জন্য শুধুমাত্র প্রশ্নপত্র ডাকযোগে বেশি লাগে না।
৫. বিস্তৃত এলাকা অধ্যয়ন : প্রশ্নপত্র পদ্ধতি তখনই বেশি প্রযোজ্য হয় যখন গবেষণার বিষয় ও এলাকা বিস্তৃত এলাকাব্যাপী গবেষণাকার্য পরিচালনা করা সম্ভব হয়, যা অন্য পদ্ধতিতে সম্ভব নয়। কারণ এখানে সরাসরি না উপস্থিত হয়ে ডাকযোগে অথবা পোস্টালের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র বিতরণ করা যায়, যার জন্য উত্তরদাতার যত দূরত্বই থাকুক না কেন সহজেই তথ্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার শেষে বলা যায় যে, সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণায় প্রশ্নপত্রের গুরুত্ব আধক। এ পদ্ধতিতে সঠিক যথার্থ ও বিবেচ্য উত্তর পাওয়া যায় যা অন্য পদ্ধতির ক্ষেত্রে অসম্ভব। সেজন্য সামাজিক গবেষণায় এ পদ্ধতিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়