সামাজিক আইন ও সমাজ সংস্কারের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় কর।

অথবা, সামাজিক আইন ও সমাজ সংস্কারের মধ্যে ইতিবাচক দিক নির্ণয় কর।
অথবা, সামাজিক আইন ও সমাজ সংস্কারের মধ্যে সাদৃশ্য বর্ণনা কর।
অথবা, সামাজিক আইন ও সমাজ সংস্কারের মধ্যে সামঞ্জস্য লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : সামাজিক আইন ও সমাজ সংস্কারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সামাজিক কার্যক্রম ও সমাজসংস্কার সমাজকর্মের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।
সামাজিক আইন ও সমাজসংস্কারের মধ্যে সম্পর্ক : উভয়ের সম্পর্কের বিশেষ দিকগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো :
১. সমাজকর্মের পরিপূর্ণতা : সমাজকর্মের পরিপূর্ণতা আনয়নে সামাজিক আইন ও সমাজসংস্কার উভয়েই সহায়তা করে। এরা আধুনিক সমাজকর্মের সহায়ক শক্তি হিসেবে বিবেচিত, সমাজের কুপ্রথা দূরীকরণে সমাজসংস্কার আন্দোলন পরিচালিত করে।
২. অবহেলিত শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা : সমাজে অবহেলিত শ্রেণির ওপর নির্যাতন বন্ধে সামাজিক আইন সমাজসংস্কার কার্যক্রম পরিচালিত করে। বিশেষ করে বঞ্চিত শিশু, নারী ও কৃষককূলকে রক্ষার জন্য উভয়ে আন্দোলন পরিচালনা করে থাকে।
৩. উৎপত্তিগত মিল : সমষ্টিগত উদ্যোগ, জনমত গঠন, জনসমর্থন ও আন্দোলনের মাধ্যমে সামাজিক আইন ও সমাজসংস্কারের উৎপত্তি। ফলে উৎপত্তিগত দিক থেকে উভয়ের মধ্যে মিল রয়েছে।
৪. অধিকার আদায় ও সংরক্ষণ : সামাজিক আইন ও সমাজসংস্কার জনগণের অধিকার আদায় ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে পরিচালিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ আইন ১৮২৯ ও এজন্য আন্দোলন, হিন্দু বিধবা বিবাহ আইন ১৮৫৬ ও এজন্য আন্দোলন প্রভৃতি ।
৫. আইন প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণ : সামাজিক আইন ও সমাজসংস্কার নীতি নির্ধারণ ও আইন প্রণয়নের মাধ্যমে জনগণের সমস্যা সমাধানে প্রচেষ্টা চালায়। সমাজসংস্কারকরা এজন্য আন্দোলন পরিচালনা করেন, কর্তৃপক্ষের নিকট চাপ প্রয়োগ করেন, এক পর্যায়ে কর্তৃপক্ষ বা নীতি নির্ধারকরা আইন প্রণয়নে সচেষ্ট হয়।
উপসংহার : সামাজিক আইন ও সমাজ সংস্কার উভয়ই চায় সমাজ থেকে ক্ষতিকর কুপ্রথা বা কুসংস্কারের মূল্যোৎপাটন হোক । এ লক্ষ্যে উভয়েই স্ব স্ব অবস্থানে থেকে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন এবং সামাজিক কুসংস্কার দূরীকরণে উদ্যোগ গ্রহণ করেন।