সামাজিক কার্যক্রম ও ব্যক্তি সমাজকর্মের সম্পর্ক লিখ।

অথবা, সামাজিক কার্যক্রম ও ব্যক্তি সমাজকর্মের সাদৃশ্যগুলো লিখ।
অথবা, সামাজিক কার্যক্রম ও ব্যক্তি সমাজকর্মের আন্তঃসম্পর্কের দিকগুলো তুলে ধর।
অথবা, সামাজিক কার্যক্রম ও ব্যক্তি সমাজকর্মের সামঞ্জস্য বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : সামাজিক কার্যক্রম সমাজকর্মের একটি সাহায্যকারী পদ্ধতি এবং ব্যক্তি সমাজকর্ম সমাজকর্মের একটি মৌলিক পদ্ধতি। সমস্যা সমাধানে ব্যক্তি সমাজকর্মকে বাস্তবে প্রয়োগের জন্য অবশ্যই সামাজিক কার্যক্রমের আবশ্যকতা রয়েছে। অর্থাৎ এ দুটো পদ্ধতির মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে।
সামাজিক কার্যক্রম ও ব্যক্তি সমাজকর্মের সম্পর্ক : নিম্নে সামাজিক কার্যক্রম ও ব্যক্তি সমাজকর্মের সম্পর্কের দিকগুলো তুলে ধরা হলো :
১. একই মূল্যবোধ : সামাজিক কার্যক্রম ও ব্যক্তি সমাজকর্ম পদ্ধতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে উভয়েই সমাজকর্মের একই মূল্যবোধ অনুসরণ করে থাকে। ফলে সমাজকর্মের মূল্যবোধ অনুসরণে পদ্ধতির মধ্যে মিল রয়েছে।
২. একই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : সামাজিক কার্যক্রম ও ব্যক্তি সমাজকর্ম সমাজস্থ মানুষের সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে কাজ করে থাকে। এজন্য উভয়েই সহযোগিতার মাধ্যমে সামাজিক সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা চালায়। তাই উভয়ের লক্ষ্য এক অভিন্ন।
৩. অভিন্ন বিষয়বস্তু : সমাজে ব্যক্তি, দল বা সমষ্টি নানা সমস্যায় পতিত হয়। ব্যক্তি সমাজকর্ম ব্যক্তির সমস্যা নিয়ে এবং সামাজিক কার্যক্রম সমাজের সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করে থাকে। ফলে উভয়েরই বিষয়বস্তু হলো সামজিক সমস্যা।
৪. অনুকূল পরিবেশ : ব্যক্তি সমাজকর্ম ব্যক্তির সমস্যা সমাধানে অনুকূল পরিবেশ প্রত্যাশা করে। সামাজিক কার্যক্রম ও সমাজের কল্যাণে ইতিবাচক পরিবেশ আনয়নের জন্য প্রচেষ্টা চালায়। ফলে অনুকূল পরিবেশ উভয়ই চায় ।
৫. অভিন্ন সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়া : সমাজকর্মের সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়া উভয় পদ্ধতির জন্য অত্যাবশ্যক। অর্থাৎ সমাজকর্ম অনুশীলনের সময় যেমন সমাজকর্মের ‘সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়া’ প্রয়োজন হয় সামাজিক কার্যক্রমেও সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়া অনুশীলনের দরকার হয়।
৬. পারস্পরিক নির্ভরশীলতা : ব্যক্তি সমাজকর্ম ও সামাজিক কার্যক্রম উভয়েই সামাজিক সমস্যা নিয়ে কাজ করে থাকে। বিশেষ করে সামাজিক কার্যক্রম ব্যক্তি সমাজকর্মকে সমস্যা সমাধানে রাসরি সহায়তা করে। ফলে উভয়ে সমস্যার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল।
৭. সংগতিবিধানে সহায়তা : সামাজিক কার্যক্রম ও ব্যক্তি সমাজকর্ম উভয়েই পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যবিধানে তৎপর থাকে । এজন্য কুসংস্কার দূরীকরণ ও প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নে উভয়েই সহায়তা করে থাকে।
৮. জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ : সমাজকর্মের উভয় পদ্ধতিতেই জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যাবশ্যক। এ ক্ষেত্রে মক্কেল উভয় পদ্ধতিতেই সমস্যা সমাধানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনায় দেখা যাচ্ছে যে, সামাজিক ও কার্যক্রম ও ব্যক্তি সমাজকর্ম পদ্ধতির মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। উভয়েই সামাজিক সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এজন্য সমাজের কল্যাণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।