সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি প্রক্রিয়া আলোচনা কর।

অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি স্তরগুলো আলোচনা কর।
অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি পর্যায়গুলো আলোচনা কর।
অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি ধাপগুলো বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : সমাজকর্মের সাহায্যকারী পদ্ধতি হিসেবে সামাজিক কার্যক্রম একটা সুশৃঙ্খল প্রক্রিয়া হিসেবে
কতকগুলো স্তর বা ধাপ অনুসরণ করে থাকে। এ স্তর বা পর্যায় অনুসরণ করেই সামাজিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি প্রক্রিয়া : নিম্নে এ সামাজিক কার্যক্রম প্রক্রিয়ার ৪টি ধাপ বা স্তরসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. অনুভূত চাহিদা বা সমস্যা চিহ্নিতকরণ (Recognition of the problem and felt-needs) : সামাজিক কার্যক্রমের প্রথম স্তর বা পদক্ষেপ হলো অনুভূত চাহিদা বা সমস্যা চিহ্নিত করা। অর্থাৎ সামাজিক কার্যক্রমকে সফল করতে হলে প্রথমেই সমাজে বিরাজমান বহুমুখী সমস্যা থেকে সবচেয়ে ক্ষতিকর ও প্রভাব বিস্তারকারী সমস্যা অনুভব ও চিহ্নিত করতে হবে। এর ফলে সামাজিক পরিবর্তনও কাঙ্ক্ষিত হবে। সামাজিক কার্যক্রমের সমস্যা চিহ্নিতকরণের পদক্ষেপসমূহ হচ্ছে- অনুভূত সমস্যা সম্পর্কে অনুসন্ধান বা তথ্যসংগ্রহ করা, সমস্যা সম্পর্কে জনগণের মতামত গ্রহণ, পর্যবেক্ষণযোগ্য ও
বাস্তব সম্পর্কিত তথ্য নেয়া, সরকারি ও বেসরকারি নথিপত্র নিয়ে আলোচনা, সাক্ষাৎকার গ্রহণে শিক্ষিত ও সচেতন ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়া, সংবাদপত্রে সমস্যা সম্পর্কে খবর দেওয়া প্রভৃতি।
২. প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ (Gathering needed information) : সামাজিক কার্যক্রমের অন্যতম কাজ হলো প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা। কিন্তু কোন সমস্যাটি গ্রহণ করা হবে তা নির্ভর করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের উপর। অর্থাৎ যে সমস্যাটি চিহ্নিত হবে সে সম্পর্কে ব্যাপক তথ্য সামাজিক কার্যক্রম উদ্যোক্তাদের থাকা একান্ত আবশ্যক। সাধারণত সে সমস্যাকে চিহ্নিত করা হয় যে সমস্যা সমাজে ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে এবং সমাজের মানুষ সে সমস্যা দূরীকরণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। যেসব সমস্যা বা উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলো হলো : পত্র-পত্রিকার খবর,
সামাজিক জরিপ, দক্ষ সমাজকর্মীর পর্যবেক্ষণ, পুনঃপৌনিক অভিযোগ, অপূরিত চাহিদা, কেইস রেকর্ড প্রভৃতি।
৩. জনগণকে জ্ঞাত করা (Giving information to the people) : চিহ্নিত সমস্যা সম্পর্কে জনগণকে অবগত করা এ স্তরের কাজ । সামাজিক কার্যক্রমের উদ্যোক্তা মূলত কয়েকজন। কিন্তু এর বাস্তবায়ন করে ব্যাপক জনগণ। কাজেই যারা বাস্তবায়ন পর্যায়ে কাজ করবে সমস্যার ব্যাপকতা ও প্রভাব সম্পর্কে তাদের স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। যাতে করে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কার্যক্রমে অংশগ্রহণে আগ্রহী হয়। ব্যাপক গণসংযোগ প্রক্রিয়ার কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে সমাজকর্মী জ্ঞানদানের কাজটি সম্পন্ন করেন। এক্ষেত্রে তিনি সাধারণত জারি, সারি, কবি গান, রেডিও, টিভি, পত্র-পত্রিকা, সিনেমা,
পোস্টার, সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, সিম্পোজিয়াম, দলীয় আলোচনা প্রভৃতি কৌশল অবলম্বন করেন।
৪. সংগঠন (Organization) : সামাজিক সমস্যা সমাধানে সামাজিক কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর হলো সংগঠন। শক্তিশালী ও আনুষ্ঠানিক এ সংগঠনে থাকবে দলনেতা, সমর্থক ও কর্মী এবং তাদের দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করা থাকবে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সাংসদ প্রমুখ এ সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত হবে মূলত সংগঠনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের উপর চাপ প্রয়োগ করে সমস্যা মোকাবিলা করা সহজ হয়।
এবং প্রশাসনকে প্রভাবিত করে সামাজিক
চায়। অর্থাৎ, উক্ত ধারাবাহিকতায় সামাজিক কার্যক্রম চূড়ান্ত সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়।
উপসংহার : উপরিউক্ত ধারাবাহিক স্তর বা ধাপ অনুসরণ করে সংগঠিত দলীয় প্রচেষ্টার মাধ্যমে সামাজিক নীতি, সামাজিক আইন
কার্যক্রম সমাজে পরিকল্পিত পরিবর্তন ও সংস্কার সাধন করতে