অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের অ্যাপ্রোচসমূহ লিখ।
অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের কাঠামো লিখ।
অথবা, সামাজিক কার্যক্রমের পদ্ধতিসমূহ লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : সামাজিক কার্যক্রম সমাজের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ব্যাপক সামাজিক পরিবর্তন আয়নে প্রত্যাশী। সমাজের সার্বিক কল্যাণ এর মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে সামাজিক কার্যক্রম কতিপয় কৌশল ও পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। এ প্রসঙ্গে H. Y. Siddiqui বলেছেন, “Strategy is the adoption of one of the several coherent
sets of possible actions to achieve a specific goal.” অর্থাৎ, কোনো বিশেষ লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্ভাব্য কর্মোপযোগী একগুচ্ছ সামঞ্জস্যপূর্ণ উপায়ের যে কোনটি গ্রহণই কৌশল। তবে প্রয়োজনে একাধিক কৌশল গ্রহণেরও দরকার হয়।
সামাজিক কার্যক্রমের পদ্ধতিসমূহ : বিশেষজ্ঞগণ সামাজিক কার্যক্রমের বিভিন্ন কৌশল বা পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেছেন। মনীষী W. A. Friedlander সামাজিক কার্যক্রমের ৪টি কৌশল বা পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলো হলো :
যোগাযোগ (Communication);
তথ্য ও শিক্ষামূলক প্রচারণা (Information and educational publicity);
প্রচলিত আইনের উন্নয়ন (Promotion of legislation) ও আইন পরিষদ গঠন (Legislation council)।
রিচার্ড ব্রায়েন্ট (Richard Bryant) তাঁর “Community Action” গ্রন্থে সামাজিক কার্যক্রমের দুটি কৌশলের কথা
উল্লেখ করেছেন । যথা : ১. দরকষাকষি (Bargaining) এবং ২. মুখোমুখি হওয়া (Confrontation)। Richard Bryant দরকষাকষি বলতে আবেদনপত্র পেশ করা, প্রভাবিতকরণ প্রচেষ্টা, তথ্য ও প্রকাশনা, অভিযান প্রভৃতিকে বুঝিয়েছেন। অপরদিকে, মুখোমুখি হওয়া বলতে প্রতিবাদ ধর্মঘট, বিক্ষোভ প্রদর্শন, অবস্থান গ্রহণ প্রভৃতির কথা
উল্লেখ করেছেন। সামাজিক বিশেষজ্ঞ ড. দেশাই (Desai) সামাজিক কার্যক্রম পদ্ধতিতে সমাজকর্মীদের কর্তৃক ব্যবহৃত তিন ধরনের
সামাজিক কার্যক্রম কৌশলের কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলো হলো :
১. সহযোগিতামূলক (Collaborative); ২. দরকষাকষি (Bargaining) এবং ৩. সংঘর্ষমূলক (Conflectual)। অন্যদিকে, Zeltman এবং Duncan তাঁদের সমষ্টি উন্নয়ন অভিজ্ঞতার আলোকে চার ধরনের সামাজিক উন্নয়নের কথা বলেছেন। যথা :
১. শিক্ষামূলক কৌশল (Educational strategy); ২. প্ররোচনামূলক কৌশল (Persuasive strategy);
৩. সুবিধামূলক কৌশল (Facilitative strategy); ৪. শক্তিপ্রয়োগ কৌশল (Power strategy)।
উপসংহার : নতুন আইন প্রণয়ন ও পুরাতন আইনের সংশোধন করা সামাজিক কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। সামাজিক সমস্যা সমাধানে জনমত সৃষ্টির মাধ্যমে আইন প্রণেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। এ ধরনের কৌশলের অংশ
হিসেবে সভা-সমাবেশ, স্মারকলিপি প্রদান প্রভৃতির আয়োজন করা হয়। নতুন আইন প্রণয়ন ও পুরাতন আইন সংশোধনের
ফলে সামাজিক কার্যক্রম ফলপ্রসূ হয়।