সমষ্টি সংগঠন পদ্ধতিসমূহ কি?

অথবা, সমষ্টি সংগঠনের কৌশলসমূহ আলোচনা কর।
অথবা, সমষ্টি সংগঠনের অ্যাপ্রোচগুলো লিখ।উত্তর৷ ভূমিকা : আধুনিক সমাজকর্মের মূল লক্ষ্য হল ব্যক্তি, দল ও সমষ্টিকে এমনভাবে সাহায্য করা, যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের সমস্যা সমাধান করতে পারে। সেজন্য সমাজকর্ম মৌলিক ও সহায়ক পদ্ধতি নামে দু’টি পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। সমষ্টি সংগঠন হল সমাজকর্মের একটি মৌলিক পদ্ধতি। এ পদ্ধতির সাহায্যে সমস্যাগ্রস্ত সমষ্টির সমস্যাবলি চিহ্নিত করে তা যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে সমষ্টির জনগণকে সক্ষম করে তোলা হয়। সেজন্য সমষ্টি সংগঠন কতিপয় পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। এসব পদ্ধতির মাধ্যমে সমষ্টির জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়।
সমষ্টি সংগঠনের পদ্ধতিসমূহ : সমষ্টি সংগঠন সমষ্টির সমস্যা সঠিকভাবে সমাধানের লক্ষ্যে কতিপয় পদ্ধতির সাহায্যে সমষ্টির জনগণকে সহায়তা করে থাকে। এসব পদ্ধতির সঠিক প্রয়োগের উপরই নির্ভর করে সমস্যা
কতটুকু সমাধান হবে। নিম্নে এ পদ্ধতিগুলো আলোচনা করা হলঃ বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী Aurthur Dunhum তাঁর The New Community Organization’ গ্রন্থে সমষ্টি
সংগঠনের নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন :
ক. পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট কার্যাবলি সম্পর্কিত পদ্ধতিসমূহ (Planning and Related Activities) : সমাজবিজ্ঞানী Aurthur Dunham সমষ্টি সংগঠনের একটি বৃহৎ পদ্ধতি হিসেবে পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট কার্যাবলিকে
বুঝিয়েছেন। তাই পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট কার্যাবলি সমষ্টি সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এ পদ্ধতির আওতায় আরও কিছু পদ্ধতির কথা তিনি বলেছেন। সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলঃ
১. তথ্য অনুসন্ধান (Fact Finding) : পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট কার্যাবলির গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল তথ্য অনুসন্ধান। এ পদ্ধতির
মাধ্যমে জরিপ পরিচালনা করে সমষ্টির সমস্যা, তাদের সম্পদ চাহিদা সম্পর্কিত নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
বিশ্লেষণ (Analysis) : তথ্য বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। সমষ্টির সম্পদ, চাহিদা ও সমস্যা সম্পর্কে সংগৃহীত তথ্যাবলি এখানে বিশ্লেষণ ও সারণীকরণ করা হয়, যাতে করে ঐ সমষ্টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।
৩. পরিকল্পনা (Planning) : পরিকল্পনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। সমষ্টির সমস্যা, চাহিদা ও সম্পদ সম্পর্কে যে তথ্য সংগৃহীত হয়েছিল তা যাচাই বাছাই করে দেখা হয় কোন কোন সমস্যাগুলো আগে সমাধান করা হবে। এরপর ঠিক করা হয় কিভাবে তা করা হবে। মূলত পরিকল্পনা নেওয়া হয় কর্মসূচির সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য।

  1. মূল্যায়ন (Evaluation) : মূল্যায়ন পদ্ধতিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সমষ্টি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ, সে তথ্য যাচাই বাছাই, পরিকল্পনা প্রণয়ন, এরপর মূল্যায়ন করে দেখা হয় কোথাও কোন ভুলত্রুটি হয়েছে কি না। কারণ ভুলত্রুটি হওয়া
    স্বাভাবিক। ভুলত্রুটিগুলো মূল্যায়নের মাধ্যমে ধরা পড়ে।
    উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার শেষে বলা যায় যে, একটি সমষ্টির সমস্যা ও সম্পদসমূহ চিহ্নিত করে তাদের সমস্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সমাধানের জন্য সমষ্টি সংগঠনকে অনেক রকম পদ্ধতির আশ্রয় গ্রহণ করতে হয়। এসব
    পদ্ধতির সঠিক ও যথাযথ প্রয়োগের উপরই সমষ্টি সংগঠনের কার্যকারিতা অনেকটা নির্ভর করে।
https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%9a%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%bf/