প্রতিযোগিতার প্রকৃতি তুলে ধর।

অথবা, প্রতিযোগিতার বৈশিষ্ট্যগুলো লিখ।
অথবা, প্রতিযোগিতার মানদণ্ড লিখ ।
উত্তর : প্রতিযোগিতার প্রকৃতি কি? এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে যে, কতকগুলো বিশেষ বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতেই প্রতিযোগিতার প্রকৃতি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করা যায়।
প্রথমত, প্রতিযোগিতা সর্বজনীন ও নিরবচ্ছিন্ন। প্রত্যেক সমাজে এবং সব শ্রেণির লোকের মধ্যেই প্রতিযোগিতা বিদ্যমান; যেমন- ছাত্র, শিক্ষক, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, শ্রমিক, মালিক প্রত্যেকের মধ্যেই প্রতিযোগিতার ভাব লক্ষ্য করা যায় । সংক্ষেপে বলা যেতে পারে যে, সমাজের সব শ্রেণির লোকের মধ্যেই প্রতিযোগিতা দেখা যায়।
দ্বিতীয়ত, প্রতিযোগিতার কোন শেষ নেই। মানুষের যেমন আশা-আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই তেমনি প্রতিযোগিতারও শেষ নেই। আজ এক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হলে কাল সে আরো এক ধাপ উচ্চ প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে চায়। এভাবে ক্রমান্বয়ে প্রতিযোগিতার মনোভাব বেড়ে চলে।
তৃতীয়ত, প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য থাকে লক্ষ্যের দিকে, কাম্যের দিকে নয়। সেজন্য বলা যায় প্রতিযোগিতা ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়। একটি নির্দিষ্ট কাম্যকে লক্ষ্য করে প্রতিযোগিতার মনোভাব গড়ে উঠে। অতএব বলা যায়, কেন্দ্র করেই প্রতিযোগিতা দেখা দেয়।
চতুর্থত, প্রতিযোগিতা ব্যক্তির বা গোষ্ঠীর প্রত্যাশাকে বর্ধিত করে, ব্যর্থতাকে দূরে সরিয়ে দিয়ে সাফল্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার উপাদান সৃষ্টি করে প্রতিযোগিতা ব্যক্তিকে বা গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য সিদ্ধিতে প্রণোদিত করে। সেজন্যই পরিবর্তনশীল সমাজে প্রতিযোগিতা এত প্রবল।
পঞ্চমত, প্রতিযোগিতা একটা নিয়ন্ত্রণ মেনে চলে। নিয়ন্ত্রণহীন প্রতিযোগিতা বলে কিছু নেই। প্রত্যেক প্রতিযোগিতাই নিয়মমাফিক।
ষষ্ঠত, প্রতিযোগিতা হলো এক ধরনের বিরোধ বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এটি চলমান, চিরন্তন এবং গতিশীল যা ব্যক্তিক বা নৈর্ব্যক্তিক হতে পারে কিংবা গঠনমূলক বা ধ্বংসাত্মক হতে পারে। জাগতিক বিষয়, মর্যাদা, ক্ষমতা, সুনাম বা খ্যাতিকে কেন্দ্র করেই এর সৃষ্টি।
সপ্তমত, সমাজব্যবস্থার পরিবর্তনশীলতার কারণে প্রতিযোগিতা খুবই প্রবল। ফলে এটি দলীয় আশা-আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধি করে।
অষ্টমত, প্রতিযোগিতাকে মার্জিত সংগ্রাম বলা যায়। যেমন- কর্মে প্রতিষ্ঠা সামাজিক প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি ।