অথবা, সত্যতা সম্পর্কে শঙ্করাচার্যের মত সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, সত্যতা সম্পর্কে শঙ্করের ধারণাটি কী?
অথবা, শঙ্কর কীভাবে সত্যতাকে ব্যাখ্যা করেন?
উত্তর৷ ভূমিকা : মহর্ষি বাদ্রায়ন বেদান্ত দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা। বাদরায়ন বেদান্ত দর্শনের যে সূত্রগুলো ব্যাখ্যা করেছেন তা খুবই সংক্ষিপ্ত’ বলে বিভিন্ন ভাষ্যকর বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এ সকল ব্যাখ্যার মধ্যে শঙ্করাচার্য ও রামানুজ।প্রদত্ত ব্যাখ্যা প্রাধান্য লাভ করেছে। অন্যান্য মতবাদের ন্যায় জ্ঞানতত্ত্বেও শঙ্করাচার্য ও রামানুজ নিজস্ব স্বকীয়তা দিয়ে আলোচনা করেছেন। শঙ্কর তাঁর জ্ঞানতত্ত্বে জ্ঞানের চারটি উৎসের কথা বলেছেন। যথা : (ক) প্রমাণ; (খ) পরাবিদ্যা ও
অপরাবিদ্যা; (গ) সত্যতা ও (ঘ) ভ্রম।
সত্যতা : শঙ্করাচার্যের মতে, ব্যবহারিক জ্ঞানের দিক থেকে জ্ঞানের মধ্যে প্রমাতৃ, প্রমেয় ও প্রমাণভেদ আছে। আমাদের জীবনেই শুধু এ তিনের স্বাতন্ত্র্য আছে। অদ্বৈত আত্মার জ্ঞান হয় তখন প্রমাতৃ ও প্রমাণের ভেদ তিরোহিত হয়। শঙ্করাচার্য বলেন, সত্যতা নির্ণয়ের মাপকাঠি হলো অবাধিতত্ত্ব। অদ্বৈত আত্মার জ্ঞান যথার্থ, যেহেতু এ জ্ঞান অবাধিত। বাচস্পতি সত্য জ্ঞানের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, সত্য হলো সেই জ্ঞান যা অবাধিত, অনধিগত ও অসন্দিগ্ধ। ব্যবহারিক জ্ঞানের সাদৃশ্য, ব্যবহারে জ্ঞানের কার্যকারিতা এবং অন্যান্য ব্যবহারিক জ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্য। কোন বস্তু সত্য কি না তা নির্ভর করে সেই বস্তুর উপর, আমাদের ধারণার উপর নয়। সত্য এবং মিথ্যা উভয়ই সংশ্লিষ্ট বস্তুর সাথে সম্বন্ধযুক্ত।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শঙ্কর বেদান্ত দর্শনের ভাষ্যকার হিসেবে যে তত্ত্ব দিয়েছেন তা অনেকাংশে গ্রহণযোগ্য। তাইতো শঙ্করাচার্যের জ্ঞানতত্ত্ব দর্শনের আলোচনায় প্রমাণ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।


