শিল্পোত্তর যুগের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিবরণ দাও।

অথবা, শিল্পোত্তর যুগের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের উল্লেখ কর।
অথবা, শিল্পোত্তর যুগের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
মানুষের পার্থিব প্রয়োজন মিটানোর জন্য যেসব প্রথা সমাজে মোটামুটি স্থায়ী রূপ ধারণ করেছে, সেসবকে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বলা হয়। অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গোটা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। সম্পত্তির মালিকানা, শ্রমবিভাগ এবং বিনিময় ব্যবস্থা হলো অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দিক।
শিল্পোত্তর যুগের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান : বর্তমান বিজ্ঞানের চরম উন্নতির যুগে সর্বক্ষেত্রে বিশেষ করে শিল্পকারখানায় বিজ্ঞানের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে সকল ক্ষেত্রে এমনকি শিল্পক্ষেত্রেও বিপবাত্মক পরিবর্তন ঘটেছে। বাষ্পশক্তির প্রয়োগের ফলে ইংল্যান্ডে যেমন অষ্টাদশ শতাব্দীতে শিল্পবিপব ঘটে, তেমনি বিংশ শতাব্দীর ষাট দশক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে উৎপাদন পদ্ধতি পরিবর্তন ঘটেছে। এ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠারও কতকগুলো বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন-
ক.শিল্পোত্তর যুগে অর্থাৎ বর্তমান সময়ে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের সেবামূলক কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ঘটে।
খ.চাকরির ক্ষেত্রে পেশাদারি ও প্রয়োগবিদ্যাবিদ শ্রেণির প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। শিল্পোন্নত সমাজে কর্মরত্ব শ্রমিকদের মধ্যে অর্ধকুশলী শ্রমিকদের দল একক গোষ্ঠী হিসেবে সর্বাধিক পরিচিতি পায়।
গ.শিল্পোন্নত সমাজে তত্ত্বগত জ্ঞানের ভিত্তিতে নতুন কর্ম প্রণালীর উদ্ভাবন ও নীতিনির্ধারণ হলো এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। সকল অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় উৎপাদনের ক্ষেত্রে জ্ঞানের অপরিসীম গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না।
কিন্তু প্রাক শিল্পযুগে বা শিল্পোন্নত সমাজে প্রায়োগিক জ্ঞানের উপর ভিত্তি করেই উৎপাদন ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। অপরপক্ষে, শিল্পোন্নত সমাজে তত্ত্বগত জ্ঞানের ভিত্তিতে উৎপাদন ব্যবস্থায় নতুন নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন ও পরিবর্তন করা হয়। আর এটাই হলো শিল্পোত্তর সমাজের অনন্য বৈশিষ্ট্য।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, মানুষের পার্থিব প্রয়োজন মিটানোর যেসব প্রথা সমাজে মোটামুটি স্থায়ীরূপ ধারণ করেছে তাকে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বলে। অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের উপর ভিত্তি করে সমাজ পরিচালিত হয়। সম্পত্তির মালিকানা, শ্রমবিভাগ ও বিনিময় ব্যবস্থা হলো অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দিক।