অথবা, গণযোগাযোগ কী?
অথবা, গণমাধ্যম বলতে কী বুঝ?
উত্তর৷ ভূমিকা : সামাজিকীকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাহায্যে নানাবিধ ঘটনা, সমস্যা, সামাজিক বিধিব্যবস্থা প্রভৃতি সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়।
গণমাধ্যম : গণমাধ্যম সমাজবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যয় হিসেবে বিবেচ্য। সামষ্টিক আচরণ বা গণআচরণ হচ্ছে জনগোষ্ঠীর সাদৃশ্যপূর্ণ অপেক্ষাকৃত পরিবর্তনশীল ও ক্ষণস্থায়ী আচরণ। গণযোগাযোগের মাধ্যমে এসব আচরণের বিকাশ ঘটে । গণযোগাযোগের মাধ্যমগুলো গণমানুষের চিন্তাচেতনা ও মানসিকতার পরিবতর্নে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে ।
শাব্দিক অর্থ : ল্যাটিন শব্দ Masse শব্দ থেকে ইংরেজি Mass শব্দের উদ্ভব, যার অর্থ হচ্ছে, গণ বা বৃহৎ জনগোষ্ঠী । অর্থাৎ যখন বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হয় তখন তাকে গণমাধ্যম বা গণযোগাযোগ বলে । গণযোগাযোগ হচ্ছে ব্যক্তিক এবং আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের একটি বিস্তৃত রূপ। মানবীয় চিন্তাচেতনা এবং ভাবগুলো পারস্পরিক আদানপ্রদানের মাধ্যমে গ্রহণ করাই হচ্ছে গণযোগাযোগ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে গণমাধ্যম বা গণযোগাযোগের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
‘Oxford Dictionary of Sociology’ তে বলা হয়েছে, “The mass communication are defined as large scale organizations which use one or more of these technologies to communicate with large numbers of people.”
C. Wright Mill তাঁর ‘The Power Elete’ (1956) গ্রন্থে উল্লেখ করেন, “Mass communication involves messages sent from mass sources in mass ways to audience, often to make mass money.”
D. S. Methta বলেন, “একই সময় বৃহৎ জনগোষ্ঠীর নিকট সংবাদ, ধ্যানধারণা, বিনোদন ইত্যাদি পরিবেশন করাকে গণযোগাযোগ বলে।”
R. P. Molo এর মতে, “যে প্রক্রিয়ার দ্বারা কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকার জনসাধারণের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে তাকে গণযোগযোগ বলে।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বিভিন্ন তথ্য, মনোভাব এবং আগ্রহকে কোন মাধ্যমের সাহায্যে বহুসংখ্যক লোকের নিকট পৌঁছানোর প্রক্রিয়াকে গণযোগাযোগ হিসেবে অভিহিত করা যায়। বস্তুত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে যাবতীয় তথ্য, সংবাদ ইত্যাদি সর্বসাধারণের অবগতির জন্য ব্যাপকহারে প্রচার করে তখন তাকে গণমাধ্যম বলে।