অথবা, ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের সঙ্গায়ন কর।
অথবা, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব বলতে কী বুঝ?
উত্তর৷ ভূমিকা : সমাজতত্ত্বে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও তাদের কার্যাবলি আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব সংক্রান্ত আলোচনা অপরিহার্য এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপন্ন হয়। অনেকের নিকট ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব সমার্থক প্রতিপন্ন হয়। ক্ষমতা এবং কর্তৃত্বের প্রকৃতি প্রসঙ্গে সম্যকভাবে অবহিত হওয়ার জন্য বিস্তারিত আলোচনা বিশেষভাবে বাঞ্ছনীয়।
ক্ষমতা : ক্ষমতা হলো এক ধরনের শক্তি, সামর্থ্য বা দক্ষতা প্রসূত এক রকম প্রভাব। ম্যাক্স ওয়েবার এর মতে, “ক্ষমতা হলো অপরের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্য তাতে তাদের সম্মতি নাও থাকতে পারে।” ডেভিড পোপিনো’র মতে, “ক্ষমতা হচ্ছে কোন লোক বা গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাবিত করার যোগ্যতা, তাতে ঐ লোক বা গোষ্ঠী সহযোগিতা করতেও পারে আবার নাও করতে পারে।” কিংসলে ডেভিস এর মতে, “ক্ষমতা হচ্ছে কোন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে অপরের আচরণকে নিয়ন্ত্রিণ করা।” উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে বলা যায় যে, ক্ষমতা হলো এক ধরনের সামর্থ্য। ক্ষমতার প্রকৃতি ও পরিধি যদি ব্যাপক হয় তবে অনুমোদনের বিষয়টিও ব্যাপক হয়ে থাকে।
কর্তৃত্ব : অপরকে আদেশ দান করার এবং আদেেশর প্রতি আনুগত্য আদায় করার ক্ষমতা বা অধিকারই হচ্ছে কর্তৃত্ব। ক্ষমতার সাথে বৈধতার সমন্বয়েই কর্তৃত্বের আবির্ভাব ঘটে। প্রামাণ্য সংজ্ঞা : ম্যাকাইভারের মতে, “কর্তৃত্বকে প্রায়শই ক্ষমতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়, যে ক্ষমতা অন্যকে মানতে বাধ্য করে।” যতার বিশ্ববিদ্যালয় রবাট ডাল এর মতে, “কর্তৃত্ব বলতে বৈধ প্রভাবকে বুঝায়।” ডেভিড পোপিনো’র মতে, “কর্তৃত্ব হচ্ছে বৈধ ক্ষমতা, যেটি চরিত্রগত দিক থেকে প্রতিষ্ঠানিক।” বি. ডি. জুভেনিল এর মতে, “কর্তৃত্ব হলো সম্মতিদানে প্ররোচিত করার দক্ষতা, এটি হচ্ছে কর্তৃত্বকে অনুসরণ করার ঐচ্ছিক সাইন। এ ঐচ্ছিক সম্মতি শেষ হলে কর্তৃত্বও শেষ হয়।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত সংজ্ঞার আলোকে বলা যায় যে, বৈধভাবে ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার বা ক্ষমতাই হলো কর্তৃত্ব। অবৈধভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ কর্তৃত্ব নয়, বরং তা হলো জবরদস্তি ।