অথবা, মূল্যায়ন গবেষণার প্রকারভেদ আলোচনা কর।
অথবা, মূল্যায়ন গবেষণার শ্রেণীভিত্তিক আলোচনা কর।
অথবা, মূল্যায়ন গবেষণা কত রকমের তা লিখ।
অথবা, মূল্যায়ন গবেষণার প্রকরণ আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : নির্দিষ্ট কোন বিষয় সম্পর্কে তথ্যসংগ্রহের জন্য বৈজ্ঞানিক ও সুসংঘবদ্ধ অনুসন্ধান প্রক্রিয়াকে গবেষণা বলা হয়। গবেষণা সেসব কর্মকাণ্ড, যা জ্ঞান অনুসন্ধানের আদর্শে মানসম্মত পদ্ধতির প্রয়োগ করে বিকাশলাভ করে। সামাজিক ঘটনাবলিকে সুশৃঙ্খল, যুক্তিপূর্ণ ও বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধানই সামাজিক গবেষণা। অনুসন্ধান কাজের সুবিধার জন্য সামাজিক গবেষণাকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়।
মূল্যায়ন গবেষণা (Evaluation research) : রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক উন্নয়ন কাজের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ গবেষণার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যেসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আরম্ভ হয়েছে তার পরিমাপ করাই এ গবেষণার মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য। মূল্যায়ন গবেষণাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :
১. সহগামী মূল্যায়ন;
২. পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন এবং
৩. প্রান্তিক মূল্যায়ন ।
১. সহগামী মূল্যায়ন : কোন চলমান প্রকল্পের চিরন্তন মূল্যায়ন হলো সহগামী মূল্যায়ন। প্রকল্প বাস্তবায়ন ও অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে মূল্যায়ন গবেষণা চলে। এ গবেষণা প্রকল্পের সাফল্য বা অকৃতকার্যতা মূল্যায়ন ছাড়াও দুর্বলতা নিরূপণ করে এবং তা কাটিয়ে উঠার নির্দেশ দান করে।
২. পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন : নির্দিষ্ট সময় পর পর ধাপে ধাপে প্রকল্পের সাফল্য ও ব্যর্থতা মূল্যায়নের জন্য এ গবেষণা চালানো হয়।
৩. প্রান্তিক মূল্যায়ন : প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পর তা সার্বিক মূল্যায়ন করে দেখা হয় যে, কতটুকু সফলতা অর্জিত হয়েছে। এ গবেষণা পরিচালনার ক্ষেত্রে গবেষকদের প্রচুর জ্ঞান থাকতে হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সমাজের উন্নয়ন ও সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য সামাজিক গবেষণা পরিচালিত হয়। অর্থাৎ সমাজের কোন সমস্যা সমাধানের জন্য সুশৃঙ্খল ও বিজ্ঞানভিত্তিক অনুসন্ধান প্রক্রিয়াই সামাজিক গবেষণা। আর এ গবেষণায় মূল্যায়ন গবেষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।