অথবা, প্রত্যয়ের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, প্রত্যয় কী?
অথবা, প্রত্যয় কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা : বর্তমান কালে প্রায় সর্বমহলে ‘গবেষণা’ শব্দটি অতি সুপরিচিত এবং বহুল আলোচিত। সমাজে বিভিন্ন পেশাজীবী, বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী সাহিত্যিক সকলেই গবেষণার উপর গুরুত্বারোপ করেন। এমনকি আমাদের গ্রামীণ সমাজেও সাধারণ জনগণ গবেষণা শব্দটির সাথে পরিচিত। আর এ গবেষণা কার্য পরিচালনার জন্য প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়।
প্রত্যয় : সাধারণ অর্থে ‘প্রত্যয়’ বলতে কোন ধারণা বা বিশ্বাসকে বুঝায়। সমাজ গবেষকগণ ‘প্রত্যয়’কে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতির একটি মৌলিক উপাদান হিসেবে মনে করা হয়। বস্তুত এ ঘটনার উপর অনুসন্ধানের ও পর্যবেক্ষণের সংক্ষিপ্তকরণের উপর ভিত্তি করে প্রত্যয় গড়ে উঠে।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে প্রত্যয়ের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন তা নিম্নে আলোচনা করা হলো : Goode and P. K. Hatt প্রত্যয়ের যে সংজ্ঞা প্রদান করেছেন তা প্রণিধানযোগ্য, “প্রত্যয় হচ্ছে ঘটনার মতো বিমূর্ত, কোন ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বস্তু নয়, অবস্থান যুক্ত একটি চিন্তার কাঠামো থেকে এর অর্থ নির্ণীত হয়।” (A concept like a fact, is an abstraction not a phenomenon. It takes its meaning from the thought frame work within which it is placed.)
P. V. Young ‘প্রত্যয়’ সম্পর্কে বলেছেন, “যখন একটি নতুন তথ্যরাজি নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে অন্যান্য শ্রেণি থেকে ভিন্নতর হয়ে নির্দিষ্ট নাম বা শিরোনাম গ্রহণ করে তখন তাকে একটি প্রত্যয় বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে। পক্ষান্তরে বলা যায় যে, গবেষণায় ব্যবহৃত প্রত্যয়সমূহের সুস্পষ্ট ও যথাযথ সংজ্ঞা দান করা বাঞ্ছনীয় প্রত্যয় সংক্ষিপ্ত অথচ অর্থবোধগম্য হবার মতো ব্যাপক হতে হবে। সাধারণভাবে গবেষক প্রচলিত কোন শব্দ গ্রহণ করেন এবং সে শব্দকে গবেষণা সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে একটি পৃথক অর্থ দান করেন। ফলে সে সাধারণ শব্দই গবেষণার একটি নতুন অর্থ ও দ্যোতনা নিয়ে প্রকাশিত হয়। একটি গবেষণার জন্য একটি প্রত্যয় যেন বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত না হয় গবেষককে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সমাজবিজ্ঞান কোন বিষয় বা সমস্যা সম্পর্কে তত্ত্ব গঠন এবং প্রকল্প পরীক্ষণ বা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে প্রত্যয়ের প্রয়োজন অনস্বীকার্য ।