সমাজবিজ্ঞানের বিবর্তন আলোচনা কর।

অথবা, সমাজবিজ্ঞানের বিবর্তন সম্পর্কে লিখ।
অথবা, বিবর্তনের ধারায় সমাজবিজ্ঞানের পরিবর্তন সম্পর্কে আলোচনা কর ।
অথবা, পরিবর্তিত সামাজিক পরিবেশে সমাজবিজ্ঞানের বিবর্তন সম্পর্কে আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
সমাজবিজ্ঞানকে এককভাবে একটি পৃথক বিজ্ঞান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে স্পেন্সারের অবদান অনস্বীকার্য । তাঁর বিবর্তন তত্ত্বের মাধ্যমে সমাজবিজ্ঞান অনন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়।
সমাজের বিবর্তন : হার্বার্ট স্পেন্সারের ১৮৬২ সালে প্রকাশিত গ্রন্থ ‘First Principle’ এ সমসাময়িক পদার্থবিদ্যা ও দর্শনের আলোকে বিবর্তনের সাধারণ নিয়মাবলি আলোচনা করেছেন। মূলত তিনি প্রাথমিক চিন্তাবিদদের
অন্তর্ভুক্ত। বিবর্তনবাদ প্রত্যয়টি সংজ্ঞায়িত করার পূর্বে তিনি এর নিয়মাবলি তিনটি সূত্র ও চারটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রস্তাবনা করেছেন।
প্রকল্প বা প্রস্তাবনাসমূহ :
১. শক্তিসমূহের আন্তঃসম্পর্কের নিশ্চয়তা,
২. রূপান্তরের ক্ষেত্রে শক্তির অক্ষুণ্নতা,
৩. বস্তুসমূহের প্রতিকূলতার পথ দিয়ে অগ্রসর হওয়া,
৪. গতির শৃঙ্খলা।
Spencer বস্তু ও সমাজজীবনের যাবতীয় বিষয়াদির বিবর্তন দেখিয়েছেন এভাবে-
প্রথমত, সরল অবস্থা হতে জটিল অবস্থায় রূপান্তর, দ্বিতীয়ত, সামরিক ও যুদ্ধভিত্তিক সমাজ থেকে শিল্প সমাজে রূপান্তর।
Spencer এর মতে, “বস্তুজগৎ যেমন পরিবর্তনশীল, তেমনি সমাজজীবনও পরিবর্তনশীল।” জৈবিক অভিব্যক্তির সাথে সামাজিক অভিব্যক্তির সাদৃশ্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি জীবদেহ ও মানবসমাজ উভয়ের সরল অবস্থা থেকে ক্রমে জটিল অবস্থায় উপনীত হওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
এককোষী প্রাণী যেমন বিবর্তনের মধ্যদিয়ে সরল অবস্থা থেকে জটিল ও বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়েছে, তেমনি Spencer এর মতে মানবসমাজ বন্যদশা থেকে সভ্যদশায় পৌঁছেছে পরিবর্তন ও প্রগতির হাত ধরে। মাঝখানে অনেক স্তর পার করেছে,হয়েছে সংস্কৃতির অগ্রগতি, যাকে তিনি Super Organi বলে অভিহিত করেছেন।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, Spencer এর বিবর্তনবাদ তত্ত্ব সমাজবিজ্ঞানকে এক নতুন রূপদান করেছে। তাঁর মতে জীবজগতের পরিবর্তন হয়েছে- From inorganic to organic, then to super organic.
সমাজের বিবর্তনকে তিনি প্রগতি বলেছেন।