অথবা, বাকশাল সম্পর্কে একটি টীকা লিখ।
উত্তরা৷ ভূমিকা : স্বাধীনোত্তর বাংলাদেশে ‘বাকশাল’ ছিল এক অভিনব শাসনব্যবস্থা। ‘বাকশাল’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয় কিন্তু কার্যকর হয়নি।
বাকশাল : ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনী গৃহীত হয়। এ সংশোধনের মাধ্যমে সামগ্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং একটি জাতীয় রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এক আদেশ বলে বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠনের কথা ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে বাকশালের চেয়ারম্যান হিসেবে এর সংগঠনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বাকশালের সাংগঠনিক বিষয়াদি নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি
ব্যতীত সকল কমিটি বাকশালের কমিটি হিসেবে অন্তর্বর্তীকালের জন্য কাজ করবে। মূলত বাকশাল ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আওয়ামী লীগ ও তার সমমনা ও সহযোগী দলের সমন্বয়ে গঠিত। রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ৭ জুন তারিখে এক আদেশ বলে বাকশালের গঠনতন্ত্র ঘোষণা করেন, কিন্তু এ উদ্যোগ কার্যকর হয়নি।
পরিশেষে বলা যায় যে, তৎকালীন রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সব দিকে বিশৃঙ্খলতা পরিলক্ষিত হয়। এ বিশৃঙ্খলা ও সংকটগুলো এতটাই গভীর ছিল যে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে সংকটগুলো সমাধানের জন্য রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল গঠনের ঘোষণা করেন, কিন্তু এটি কার্যকর হয়নি।