অথবা, অসহযোগ আন্দোলন বলতে কী বুঝ?
উত্তর৷ ভূমিকা : পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর সব প্রকার অন্যায়, অবিচার ও পাশবিক অত্যাচারের প্রতিবাদে অসহযোগ আন্দোলন ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অসহযোগ আন্দোলন এতটাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালিত হয়েছিল যে, পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী হতচকিত হয়ে পড়ে।
অসহযোগ আন্দোলন : পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে চক্রান্ত শুরু করলে বাংলার জনগণ স্বাধিকার আদায়ের দাবিতে গণজোয়ার সৃষ্টি করে। জনগণের আন্দোলনের মুখে শাসকগোষ্ঠী ২ ও ৩ মার্চ সান্ধ্য আইন জারি করলে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তা ভঙ্গ করে। পুলিশ নিরীহ জনতার উপর গুলি বর্ষণ করে। ফলে বহু লোক হতাহত হয়। পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে ৩ মার্চ ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। তিনি ঘোষণা করেন যে, “খুনি ইয়াহিয়া সরকারের হটকারী ও পাশবিক অত্যাচারের প্রতিবাদে আজ থেকে শান্তিপূর্ণ ‘অসহযোগ’ আন্দোলন চলতে থাকবে। কলকারখানা বন্ধ থাকবে, রেলগাড়ির চাকা বন্ধ থাকবে, খাজনা ট্যাক্স দেওয়া চলবে না এবং অফিস আদালত ব্যাংক বন্ধ থাকবে।” জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাংলার এ মুকুটহীন সম্রাটের ডাকে সাড়া দেন। বাংলার জনগণ অসহযোগ আন্দোলনে সর্বতোভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে এ আন্দোলন পালন করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অসহযোগ আন্দোলন পালিত হয়। এর ফলে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং অবশেষে ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের দিন ধার্য করেন।