১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলাফল আলোচনা কর।

উত্তর৷ ভূমিকা : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে আইয়ুব খান ক্ষমতা হতে পদত্যাগ করেন এবং জেনারেল ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা দখল করেন। এছাড়াও এ আন্দোলনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। কেননা এ আন্দোলনই স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
অথবা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্ব আলোচনা কর।
অথবা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের তাৎপর্য আলোচনা কর।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলাফল :
নিচে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলাফল আলোচনা করা হলো :
১. জাতীয়তাবাদের বিকাশ : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৫২ সালে সৃষ্ট বাঙালি জাতীয়তাবাদ এ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুসংহত হয়। ফলে বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়।
২. স্বৈরাচার বিরোধী মানসিকতা সৃষ্টি : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে স্বৈরাচার বিরোধী মানসিকতার সৃষ্টি হয়। ফলে গণতন্ত্রের জন্য আরো বেশি ত্যাগ স্বীকারের ব্যাপারে জনগণ
মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয়।
৩. এলিটদের মনোবল নষ্ট : ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন কেবল আইয়ুব খানের শাসন বিরোধী আন্দোলনই ছিল না বরং এ আন্দোলন ক্ষমতাকেন্দ্রিক এলিটদের বিরুদ্ধেও ছিল। তাই এ আন্দোলনের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষমতাকেন্দ্রিক এলিটদের মনোবল নষ্ট হয়।
৪. আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অবসান : ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে পাকিস্তান সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য হয়। ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বুঝতে পারে, ছয় দফাভিত্তিক আন্দোলনকে বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে এ মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
৫. স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সৃষ্টি : এ আন্দোলনের মাধ্যমে সৃষ্ট জাতীয়তাবোধের কারণে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাঙালি অংশগ্রহণ করে এবং স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল পাকিস্তান সৃষ্টির পর সর্ববৃহৎ আন্দোলন। এ আন্দোলনের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়েই পরবর্তীতে বাঙালি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে।