অথবা, পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার কাঠামো আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : পাকিস্তানে ১৯৫৬ ও ১৯৬২ সালের সংবিধানে প্রাদেশিক সরকার কাঠামো সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা করা হয়েছে। পাকিস্তানের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় প্রাদেশিক সরকার ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার কাঠামো : ভারত শাসন আইন (১৯৪৭) এর গুরুত্বপূর্ণ ধারা অবলম্বন করে পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক কাঠামো গড়ে ওঠে। নিচে পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার কাঠামো আলোচনা করা হলো :
১. প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা : পাকিস্তানের প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থায় দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রদেশসমূহের গভর্নরদের বিশেষ ক্ষমতা বিলুপ্ত করে নিয়মতান্ত্রিক শাসনকর্তারূপে গভর্নর জেনারেল কর্তৃক তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা ছিলেন প্রদেশের গভর্নর জেনারেলের প্রতিনিধি মাত্র।
২. মন্ত্রিসভা : মন্ত্রিসভা প্রাদেশিক আইন পরিষদের কাছে দায়ী থাকবে। প্রাদেশিক গভর্নর মন্ত্রিসভার পরামর্শ মোতাবেক শাসনকার্য সম্পাদন করবেন।
৩. রাজধানী : পূর্ব বাংলার রাজধানী নির্ধারিত হয় ঢাকা।
৪. গভর্নর : পূর্ব বাংলার প্রথম গভর্নর নিযুক্ত হন স্যার ফ্রেডারিক বোর্ন। গভর্নর ভারত শাসন আইন (১৯৪৭) অনুসারে গভর্নর জেনারেলের মতানুসারে প্রশাসনিক কাজ করতেন।
৫. পূর্ব বাংলা প্রদেশের মন্ত্রিপরিষদ : ছক নিম্নরূপ :


৬. পশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশসমূহ : ৪টি প্রদেশ নিয়ে পাকিস্তানের পশ্চিমাংশ গঠিত। যথা : (ক) পাঞ্জাব, (খ) সিন্ধু, (গ) বেলুচিস্তান ও (ঘ) উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ।
৭. দেশীয় রাজ্যসমূহ : ১৯৪৭ সালের ভারত শাসন আইন অনুযায়ী ভারতবর্ষের রাজতন্ত্রের অবসান এবং দেশীয় রাজ্যগুলোর সাথে সব চুক্তি ও সন্ধি ১৪ আগস্ট বাতিল করা হয়। এতে বলা হয়, তারা ইচ্ছামতো ভারত বা পাকিস্তানে যোগ দিতে পারবে। সে মোতাবেক পাঁচটি দেশীয় রাজ্য পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। যথা :
(i) বেলুচিস্তান
(ii) ভাওয়ালপুর রাজ্য
(iii) খায়েরপুর রাজ্য
(iv) উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ রাজ্য এবং
(v) জুনাগড় রাজ্য।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা ছিল পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অন্যতম প্রধান অঙ্গ। প্রাদেশিক গভর্নর এর অধীনে থেকে প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা শাসনকার্য পরিচালনা করতেন।