Download Our App

ভাষা বলতে কী বুঝ?

ভূমিকাঃ ভাষা হলো মানুষের মধ্যে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। এটি চিন্তা, অনুভূতি, তথ্য ও ধারণা প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হয়। ভাষার মাধ্যমে মানুষ কথোপকথন, লেখা, বা সংকেতের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। ভাষা বিভিন্ন রূপে থাকতে পারে যেমন মৌখিক (কথিত ভাষা), লিখিত (লেখিত ভাষা), এবং অঙ্গভঙ্গি (ইশারাভিত্তিক ভাষা)। ভাষা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে বিকশিত হয় এবং একটি সম্প্রদায় বা জাতির পরিচয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ভাষা বলতে আমরা সাধারণত অর্থবহ ধারণা প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত ব্যবস্থাকে বুঝি। এই ব্যবস্থায় শব্দ, বাক্য এবং ব্যাকরণ-এর নিয়মাবলী অন্তর্ভুক্ত থাকে। ভাষার মাধ্যমে আমরা আমাদের চিন্তাভাবনা, অনুভূতি, ইচ্ছা এবং তথ্য অন্যদের সাথে যোগাযোগ করতে পারি।

ভাষা মৌখিক এবং লিখিত দুটি রূপে প্রকাশ পেতে পারে।

  • মৌখিক ভাষা হল বলা-বলা ভাষা। আমরা যখন কথা বলি, তখন মৌখিক ভাষা ব্যবহার করি।
  • লিখিত ভাষা হল লেখা ভাষা। আমরা যখন চিঠি লিখি, বই পড়ি, বা ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তখন লিখিত ভাষা ব্যবহার করি।

ভাষার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল:

  • সর্বজনীনতা: ভাষা সকল মানুষের জন্য সাধারণ। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে বসবাসকারী মানুষ তাদের নিজস্ব ভাষায় যোগাযোগ করতে পারে।
  • স্বাভাবিকতা: ভাষা প্রাকৃতিকভাবে শেখা যায়। শিশুরা জন্মের পর থেকেই তাদের পরিবেশ থেকে ভাষা শিখতে শুরু করে।
  • গতিশীলতা: ভাষা স্থির নয়। সময়ের সাথে সাথে ভাষার পরিবর্তন হয়। নতুন শব্দ যুক্ত হয়, পুরনো শব্দ বাদ যায়, এবং ভাষার ব্যবহারের রীতিও পরিবর্তিত হয়।
  • বৈচিত্র্য: বিশ্বে হাজার হাজার ভাষা রয়েছে। প্রতিটি ভাষার নিজস্ব ব্যাকরণ, শব্দভান্ডার এবং ব্যবহার রীতি রয়েছে।

মানুষের ভাষার কয়েকটি মূল বৈশিষ্ট্য হল:

  1. ধ্বনিতত্ত্ব (Phonetics): ভাষার ধ্বনিগত দিক নিয়ে আলোচনা।
  2. বর্ণতত্ত্ব (Morphology): শব্দ গঠন ও তাদের আকার নিয়ে আলোচনা।
  3. বাক্যতত্ত্ব (Syntax): বাক্য গঠন এবং বাক্যের উপাদানগুলির সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা।
  4. অর্থতত্ত্ব (Semantics): শব্দ ও বাক্যের অর্থ নিয়ে আলোচনা।
  5. প্রয়োগতত্ত্ব (Pragmatics): ভাষার ব্যবহার এবং প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা।

ভাষা আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভাষার মাধ্যমে আমরা পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করতে পারি, জ্ঞান অর্জন করতে পারি, সংস্কৃতি বিনিময় করতে পারি এবং সৃজনশীল কাজ করতে পারি।

ভাষা কেবলমাত্র মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, সাহিত্য, ইতিহাস এবং জ্ঞানের ধারক হিসাবেও কাজ করে।