অথবা, বাংলাদেশে সংশোধনমূলক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ কর।
অথবা, বাংলাদেশে সংশোধনমূলক ব্যবস্থার তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷। ভূমিকা : বাংলাদেশে অপরাধী ও কিশোর অপরাধীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশ মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হবে। তাই সামাজিক সমস্যা তথা অপরাধমূলক কার্যক্রম দূর করতে হলে সংশোধনমূলক কার্যক্রমকে গুরুত্ব দিতে হবে।অপরাধীকে শাস্তির পরিবর্তে সংশোধনের ব্যবস্থা করা বিজ্ঞানসম্মত কাজ।এক্ষেত্রে সমাজকর্মী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশে সংশোধনমূলক ব্যবস্থার গুরুত্ব/সমাজকর্মীর ৪টি ভূমিকা: নিম্নে বাংলাদেশে সংশোধন ব্যবস্থার ৪টি গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করা হলো :
১. অপরাধপ্রবণতা হ্রাস : অপরাধীকে সংশোধনের সুযোগ দেয়ার ফলে সমাজে অপরাধের পরিমাণ অনেক হ্রাস পায়।কেননা, ব্যক্তি তখন অপরাধ করার চেয়ে স্বাভাবিক জীবনকে শ্রেয় মনে করে সামাজিক সমস্যাও তখন অনেকাংশে কমে যায়।
২. অর্থের অপচয় রোধ : অপরাধীকে সংশোধনের মাধ্যমে পুনর্বাসিত করলে সরকারি প্রশাসনের প্রচুর অর্থ সাশ্রয় হয়। কেননা অপরাধী স্বাভাবিক জীবনে চলে যাওয়ার ফলে কারা প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও অপরাধীদের ভরণপোষণ বাবদ অনেক অর্থ বেঁচে যায়।
৩. বিপথগামিতা থেকে রক্ষা : বর্তমানে নেতিবাচক পরিবেশের প্রভাবে তরুণ ও যুবসমাজ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।অথচ এই যুবসমাজ জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। তাই বিপথগামিতা রোধ করার জন্য সংশোধনমূলক কর্মসূচির গুরুত্ব অপরিসীম।
৪. মানসিক অবস্থার উন্নয়ন : অপরাধীকে সমাজে পুনর্বাসনের জন্য সংশোধনই একমাত্র পথ। কেননা অপরাধী সমাজের চোখে ঘৃণার পাত্র। ফলে মানসিক দিক দিয়ে সে বিপর্যস্ত থাকে।শাস্তি দিলে অপরাধী আরো অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠে।এক্ষেত্রে সংশোধনের মাধ্যমে তার মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, অপরাধী সংশোধনরত অবস্থায় বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। এ অবস্থায় তাকে সমাজে পুনর্বাসনের সুযোগ দেয়ার ফলে সে সহজেই আয়-রোজগারের পথ খুঁজে পায়।ফলে সংশোধিত ব্যক্তি স্বাবলম্বী হয়ে উঠে।