শহর সমাজসেবা কর্মসূচিতে মাঠকর্ম অনুশীলনের ৪টি ক্ষেত্র আলোচনা কর।

অথবা, শহর সমাজসেবা কর্মসূচিতে মাঠকর্ম অনুশীলনের পরিধিসমূহ তুলে ধর।
অথবা, শহর সমাজসেবা কর্মসূচিতে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের পরিধি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা :
দ্রুত শহরায়ন ও শিল্পায়নের সম্প্রসারণের ফলে গ্রামের অসংখ্য মানুষ জীবিকার অন্বেষণে শহরে ভিড় জমায়। ফলে এদেশে শহরের জনসংখ্যাও বাড়তে থাকে। ১৯০১ সালে এদেশে যেখানে নগরের জনসংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ২.৪৩%, সেখানে ১৯৫১ সালে তা দাঁড়ায় ৪.৩৪% এবং নগর জনসংখ্যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮,২০,০০০ জন। ১৯৬১ সালে নগর জনসংখ্যার হার বৃদ্ধি পেয়ে ৫.১৯%-এ দাঁড়ায় এবং নগর জনসংখ্যার পরিমাণ ২৬,৪১,০০০ জনে পৌঁছে। বর্তমানে (২০১৪ সাল) নগর জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ২৫%। শহরের জনসংখ্যাবৃদ্ধির সাথে সাথে অনেক সমস্যারও সৃষ্টি হচ্ছে। এসব সমস্যা মোকাবিলার জন্য বাংলােেদশে ১৯৫৫ সালে পরীক্ষামূলকভাবে শহর সমাজসেবা কার্যক্রম শুরু হয়।
শহর সমাজসেবা কর্মসূচি ও মাঠকর্ম অনুশীলন : নিম্নে শহর সমাজসেবা কর্মসূচিতে মাঠকর্ম অনুশীলনের ক্ষেত্রসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. শহর এলাকার উন্নয়ন চাহিদা নিরূপণ : শহরের অনুন্নত এলাকার জনসাধারণের উন্নয়নের জন্য শহর সমাজসেবা কর্মসূচি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নিম্ন আয়ের বাসিন্দা ও বস্তিবাসীর জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম। মাঠকর্ম অনুশীলনের মাধ্যমে শিক্ষানবিস সমাজকর্মীরা শহর এলাকার উন্নয়ন চাহিদা নিরূপণ করতে পারে।
২. স্থানীয় সমস্যার সমাধান : শহর এলাকার অনেক সমস্যা থাকতে পারে। যেমন- বস্তি সমস্যা, পানীয় জলের সমস্যা, পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা ইত্যাদি। এসব সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য শিক্ষানবিস সমাজকর্মীরা তাদের শিক্ষাগত জ্ঞান কাজে লাগাতে পারে।
৩. সামাজিক সমস্যার সমাধান : শহর এলাকায় বস্তি সমস্যা, কিশোর অপরাধ ও অপরাধ, বেকারত্ব, দারিদ্র্য,ভিক্ষাবৃত্তি, পতিতাবৃত্তি ইত্যাদি সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সমাজকর্মীদের ভূমিকা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
৪. বেকারদের আত্মকর্মসংস্থান : শহর এলাকার বেকারদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ড্রাইভিং, পোশাক তৈরি,এমব্রয়ডারি, টাইপিং, ক্ষুদে ব্যবসায়, অটোমোবাইল, বাঁশ ও বেতের কাজ ইত্যাদি বিষয়ে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে শহর সমাজসেবা কর্মসূচিতে সমাজকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, মাঠকর্ম অনুশীলনকারীরা শহর সমাজসেবার নিজস্ব প্রকল্পনাধীন এলাকায় অবস্থিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে গতিশীল ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রেও অবদান রাখতে পারে। সেই সাথে তরুণ প্রজন্মের মাঝে সৎ গুণাবলির বিকাশ, দারিদ্র্য বিমোচন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও তারা যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a4%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a8-%e0%a6%95/