শেয়ার কত প্রকার ও কী কী ? অগ্রগণ্য শেয়ার ও সাধারণ শেয়ারের মধ্যে পার্থক্য কী ?

[ad_1]

👉 শেয়ার কত প্রকার ও কী কী ? অগ্রগণ্য শেয়ার ও সাধারণ শেয়ারের মধ্যে পার্থক্য কী ?

উত্তর ৷ ভূমিকা : শেয়ার বলতে সাধারণত অংশীদারিত্ব বা মালিকানা বুঝায় । অর্থনীতিতে শেয়ার বলতে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকানার অংশ ও লভ্যাংশের অংশীদারিত্বকে বুঝায় ।

শেয়ারের প্রকারভেদ : শেয়ার বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে । যথা :

১. প্রাইমারি শেয়ার ,

২. সেকেন্ডারি শেয়ার ,

৩ . রাইট শেযার ,

৪. বোনাস শেয়ার ,

৫. প্রিমিয়াম শেয়ার ,

৬. অগ্রগণ্য শেয়ার ও

৭. সাধারণ শেয়ার ।

১. অগ্রগণ্য শেয়ার : যে শেয়ারের প্রাপ্য ব্যবসায়ের মুনাফা থেকে প্রথমেই মিটিয়ে দেয়া হয় তাকেই অগ্রগণ্য শেয়ার বলা হয় । অগ্রগণ্য শেয়ার নিম্নোক্ত কয়েক ধরনের হতে পারে :

ক . সঞ্চয়ী অগ্রগণ্য শেয়ার: কোন কোন বছর কোম্পানির মুনাফা নাও হতে পারে । কিন্তু মুনাফা না হলেও যেসব অগ্রগণ্য শেয়ারের মালিকদের পরবর্তী কয়েক বছরের মুনাফা থেকে লভ্যাংশ আদায় করার অধিকার থাকে তাদেরকে সঞ্চয়ী অগ্রগণ্য শেয়ার বলে ।

খ . অসঞ্চয়ী অগ্রগণ্য শেয়ার : যেসব অগ্রগণ্য শেয়ারের মালিকগণ কোন বছর মুনাফা না হলেও লভ্যাংশ না পেলে কোম্পানির পরবর্তী বছরের মুনাফা থেকে তাদের বকেয়া লভ্যাংশ আদায় করার অধিকার থাকে না , সেসব শেয়ারকে অসঞ্চয়ী অগ্রগণ্য শেয়ার বলে ।

গ . পরিশোধযোগ্য অগ্রগণ্য শেয়ার : একটি নির্দিষ্ট সময় শেষে যেসব অগ্রগণ্য শেয়ারের মূল্য শেয়ার মালিককে ফেরত প্রদান করা যায় , তাদেরকে পরিশোধযোগ্য অগ্রগণ্য শেয়ার বলা হয় ।

২. সাধারণ শেয়ার : সাধারণ শেয়ারের মুনাফা নির্দিষ্ট থাকে না । অগ্রগণ্য শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেয়ার পর বা প্রতিষ্ঠান অবসায়ন কালে সবশেষে যে শেয়ারের অংশ দেয়া হয় তাকে সাধারণ শেয়ার বলে ।

৩. প্রিমিয়াম শেয়ার : প্রিমিয়াম শেয়ার বলতে সেসব শেয়ারকে বুঝায় , যেসব শেয়ারের বিক্রয়মূল্য শেয়ার সার্টিফিকেটে উল্লিখিত মূল্যের তুলনায় বেশি হয় । ১,০০০ টাকা মূল্যের শেয়ার যদি বাজারে ২,০০০ টাকায় বিক্রয় হয় তবে সেটি হবে প্রিমিয়াম শেয়ার ।

৪. প্রিনফিল্ড শেয়ার : যে কোম্পানির শেয়ার পরিকল্পনাধীন আছে যদিও এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে নি তাকে গ্রিনফিল্ড শেয়ার বলে ।

৫. সেকেন্ডারি শেয়ার : প্রাইমারি শেয়ারের মালিক পরবর্তীতে সেকেন্ডারি বাজারে ঐ শেয়ার বিক্রয় করতে পারে । তখন ঐ শেয়ারকে সেকেন্ডারি শেয়ার বলে ।

অগ্রগণ্য শেয়ার ও সাধারণ শেয়ারের মধ্যে পার্থক্য : অগ্রগণ্য শেয়ার

১. অগ্রগণ্য শেয়ারহোল্ডার নির্দিষ্ট হারে সবার আগে লভ্যাংশ পায় । 👉 সাধারণ শেয়ার- ফার্মের অবশিষ্ট মুনাফা থেকে সাধারণ শেয়ারের লভ্যাংশ হিসাব করে বণ্টন করা হয় ।

২. এ শেয়ারহোল্ডারের নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে । 👉 সাধারণ শেয়ার- কেবল অবশিষ্ট থাকলেই শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডার লভ্যাংশ পেতে পারে ।

৩. অগ্রগণ্য শেয়ারহোল্ডারদের ভোটাধিকার ক্ষমতা নেই । 👉 সাধারণ শেয়ার- সাধারণ যে শেয়ারহোল্ডারদের ভোটাধিকার আছে তারাই কোম্পানির মালিক ।

৪. অগ্রাধিকার শেয়ারের ক্ষেত্রে ঝুঁকি কম । 👉 সাধারণ শেয়ার- সাধারণ শেয়ারের ঝুঁকি বেশি ।

৫. কোম্পানি গোটানোর সময় অগ্রাধিকার শেয়ারহোল্ডার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অংশ পেয়ে যায় । 👉 সাধারণ শেয়ার- সাধারণ শেয়ারহোল্ডার অবশিষ্ট থাকলে পায় ।

৬. অগ্রাধিকার শেয়ারহোল্ডাররা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে পারে না । 👉 সাধারণ শেয়ার- সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে কোম্পানি পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায় শেয়ার বাজার বহুবিধ হয় । ভিন্ন প্রকারের শেয়ার ভিন্নভাবে কার্য সম্পন্ন করে ।

👉 বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে উত্তম ক্রিয়াশীল সিকিউরিটি বাজার উন্নয়নের পক্ষে প্রতিবন্ধক উপাদানসমূহ ব্যাখ্যা কর ।

উত্তর ভূমিকা : বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ । এখানে উত্তম ক্রিয়াশীল সিকিউরিটি বাজার উন্নয়নের পক্ষে অনেক প্রতিবন্ধক উপাদান রয়েছে ।

নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো :

১. প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অর্থসংস্থানের দুর্বলতা : যেসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মূলধন বাজারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে তাদের মধ্যে বাংলাদেশের শিল্প ঋণ সংস্থা , বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক , বাংলাদেশ পুঁজি বিনিয়োগ সংস্থা , মার্চেন্ট ব্যাংক এবং সাধারণ বীমা করপোরেশনসমূহ প্রধান । এদের মধ্যে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান তহবিলের অভাবে মূলধন বাজারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে না । সাধারণত মূলধন বাজারে মন্দাবস্থার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের অভাব ।

২. সুষ্ঠু নীতিমালার অভাব : ঢাকা শেয়ার মার্কেট ফ্লোট করার কোন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই । কখনো এক সাথে কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার ফ্লোটের অনুমতি প্রদান করে , আবার কখনো দীর্ঘদিন চুপচাপ বসে থাকতে হয় । এটি হচ্ছে সিসিআই এর শেয়ার ফ্লোটের অনুমতি প্রদান পদ্ধতি ।

৩. প্রাথমিক ঋণপত্রের অনিয়মিত যোগান : মূলধন বাজারের স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য স্টক মার্কেটে প্রাথমিক ঋণপত্রাদির যোগানের গতিশীলতা থাকা উচিত । তা না হলে বাজারে ঋণপত্রের সংকট দেখা দিবে । প্রাথমিক ঋণপত্রের যোগানের স্থিতিশীলতা বাংলাদেশে পরিলক্ষিত হয় না ।

৪. শেয়ার ইস্যুকারী এবং ব্রোকারদের ম্যানিপুলেশন : বাংলাদেশের স্টক এক্সচেঞ্জের কিছু শেয়ার ইস্যুকারী এবং এক শ্রেণীর অসাধু ব্রোকাররা অশুভ আঁতাত করে মাঝে মাঝেই শেয়ার বাজারের ম্যানিপুলেশনের আশ্রয় নেয় । এর ফলে ভুক্তভোগী ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বাজারের উপর আস্থা হ্রাস পেয়ে থাকে ।

৫. তথ্য ব্যবস্থার দুর্বলতা : মূলধন বাজারের তথ্য প্রতিনিয়ত পাওয়া গেলে বিনিয়োগকারীদের পক্ষে যথেষ্ট সুবিধা হয় । প্রতিতিন মাস অন্তর একটি এবং বছরে একটি বড় আকারের প্রতিবেদন এসইসি বিনিয়োগকারীদের তথ্য সরবরাহের জন্য প্রকাশ করে আসছে । এরূপ রিপোর্ট বিগত দু’বছর ধরে আর প্রকাশ করা হচ্ছে না ।

৬. বিদেশি বিনিয়োগকারী : বাংলাদেশের মূলধন বাজারের উন্নয়নের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদেশিরা । কেননা বাজারের যে কোন শেয়ার আসার সময় তারা কোঠাভিত্তিক কমসংখ্যক বিদেশি বিনিয়োগকারী দেশীয় বিনিয়োগকারীদের সমান শেয়ার ক্রয় করার জন্য বাজারে আসে । কোম্পানি শেয়ার বিতরণের সাথে সাথে বাজারে শেয়ার মূল্য বেড়ে গেলে এসব শেয়ার বিদেশিরা বিক্রি করে ফেলে ।

৭. স্টক এক্সচেঞ্জের নীতি নির্ধারণ এবং ব্যবস্থাপনায় স্ববিরোধিতা : বিশ্বের অনেক দেশে মূলধন বাজারে নীতি নির্ধারণী কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ আলাদা থাকে । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকার থেকে মনোনীত ব্যক্তি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকেন ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে , বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে একটি উত্তম ক্রিয়াশীল সিকিউরিটি বাজার উন্নয়নের পথে উপর্যুক্ত বাধাসমূহ বিদ্যমান । উক্ত বাধা দূর করে আমরা বাংলাদেশে একটি উত্তম ক্রিয়াশীল সিকিউরিটি বাজার গড়ে তুলতে পারি ।

[ad_2]