অথবা, মাঠকর্ম সংস্থাপনের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ কর।
অথবা, মাঠকর্ম সংস্থানের ৮টি বৈশিষ্ট্য লিখ।
অথবা, মাঠকর্ম সংস্থানের প্রকৃতিসমূহ তুলে ধর।
উত্তর।। ভূমিকা : মাঠকর্মের জন্য বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিয়োজিতকরণকে মাঠকর্ম সংস্থাপন (Field Placement) বলা হয় । অন্যভাবে বলা যায় তাত্ত্বিক জ্ঞানার্জনের পর একজন শিক্ষানবিস সমাজকর্মীকে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহারিক জ্ঞানার্জন ও তাত্ত্বিক জ্ঞানকে বাস্তবে প্রয়োগের জন্য নিয়োগ করাই হলো মাঠকর্ম সংস্থাপন।
মাঠকর্ম সংস্থাপনের বৈশিষ্ট্য
মাঠকর্ম সংস্থাপনের কতকগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিম্নে এ বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করা হলো :
১. সমাজকর্মের শিক্ষার্থী : মাঠকর্ম সংস্থাপনের ক্ষেত্রে সমাজকর্ম বিষয়ে স্নাতক, এমএসএস প্রিলিমিনারি ও মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদেরই কেবল মাঠকর্ম অনুশীলনের জন্য বিভিন্ন এজেন্সিতে প্রেরণ করা হয়।
২. সরকারি বা বেসরকারি এজেলি : মাঠকর্ম সংস্থাপনের জন্য সরকারি বা বেসরকারি এজেন্সি বেছে নেয়া হয়।তবে এসব এজেন্সি হতে হয় সমাজকল্যাণমূলক কার্যাবলির সাথে সংশ্লিষ্ট। নারী কল্যাণ, শিশু কল্যাণ, প্রবীণ কল্যাণ, যুব কল্যাণ, স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবাধিকার প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিস সমাজকর্মীদের সংস্থাপন করা হয়।
৩. যৌথ তত্ত্বাবধান : শিক্ষানবিস সমাজকর্মীদের যৌথ তত্ত্বাবধানে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। এখানে একজন এজেন্সি বা প্রাতিষ্ঠানিক তত্ত্বাবধায়ক ও একজন বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক থাকেন। বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক হচ্ছেন সমাজকর্ম বিভাগের একজন শিক্ষক।
৪. দল গঠন : শিক্ষানবিস সমাজকর্মীদের মাঠকর্ম সংস্থাপনের জন্য দল গঠন করতে হয়।একটি দলে ন্যূনতম দুজন থেকে ৮-১০ জন শিক্ষার্থী থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে এর বেশি শিক্ষার্থীও থাকতে পারে।তবে একটি এজেন্সির জন্য আদর্শমান হচ্ছে ৪-৫ জন শিক্ষানবিস প্রেরণ করা।
৫. কাছাকাছি এলাকা : শিক্ষানবিস সমাজকর্মীদের মাঠকর্ম অনুশীলনের জন্য কাছাকাছি এলাকার কোন সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করতে হয় । তবে ক্ষেত্র বিশেষে অপেক্ষাকৃত দূরের প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের সংস্থাপন করা যেতে পারে।
৬. ওরিয়েন্টেশন : মাঠকর্ম সংস্থাপনের জন্য ওরিয়েন্টেশন -এর গুরুত্ব অপরিহার্য। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সংস্থাপিত প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পূর্ব ধারণা লাভ করতে পারেন।
৭. অনুপাত মেনে চলা : মাঠকর্মে প্রেরণের ক্ষেত্রে অনুপাত মেনে চলা হয়। একজন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে কতজন।শিক্ষানবিস থাকবে বা একটি প্রতিষ্ঠানে কতজন শিক্ষানবিস প্রেরণ করা হবে তা আনুপাতিক হারে বণ্টিত হয়।
৮. এজেন্সির চাহিদা : সংস্থাপনের ক্ষেত্রে এজেন্সির চাহিদার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়ে থাকে। এজেন্সি যদি শিক্ষানবিস সমাজকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে স্বস্তিবোধ না করে তাহলে সেখানে শিক্ষানবিস সমাজকর্মীদের প্রেরণ না করাই ভালো।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় মাঠকর্ম সংস্থাপনের কিছু নিয়মনীতি রয়েছে যেগুলো প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান ও প্রেরিত প্রতিষ্ঠান উভয়েরই মেনে চলতে হয়। এছাড়া শিক্ষানবিস সমাজকর্মী ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে নিয়োজিত সমাজকর্মীদেরকেও এসব নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়।