Download Our App

১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের কারণগুলো সংক্ষেপে আলোচনা কর।

অথবা, কী কী কারণে ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল বলে তুমি মনে কর?
উত্তর৷ ভূমিকা :
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পরপরই কাশ্মির ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরের বিরোধিতায় লিপ্ত হয়। কাশ্মির নিয়ে ১৯৪৭ সালে প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হলেও ১৯৬৫ সালের যুদ্ধটি ছিল বেশ ভয়াবহ এবং এর প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী।
১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের কারণ : নিচে ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের কারণগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. আইয়ুব খানের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা : ১৯৫৮ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে বিরোধী ও জনগণের নিকট আইয়ুব খানের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পায়। এজন্য রাজনীতিবিদরা আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার চেষ্টা চালায়। অন্যদিকে, আইয়ুব খান তার ব্যর্থতা ঢাকার জন্য এবং জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেয়ার জন্য কাশ্মির জয় করতে সচেষ্ট হন।
২. চীন-ভারত যুদ্ধের প্রভাব : ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনী পরাজিত হয় এবং চীন, ভারত শাসিত কাশ্মির অঞ্চল দখল করে নেয়। চীনের কাছে ভারতীয় বাহিনীর পরাজয় পাকিস্তানকে উৎসাহিত করে। আইয়ুব খান হঠাৎ করে তার নীতি পরিবর্তন করে পূর্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়।
৩. আন্তর্জাতিক প্রভাব : চীন-ভারত যুদ্ধের পর পাকিস্তান চীনের সাথে মৈত্রী জোট গড়ে তোলে। পাশাপাশি সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে আইয়ুব খানের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। এসব রাষ্ট্রের ইতিবাচক সাড়া পেয়ে পাকিস্তান কাশ্মির যুদ্ধের ব্যাপারে উৎসাহিত হয়।
৪. পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাধিক্য নষ্ট করা : আইয়ুব খান ভেবেছিলেন পাকিস্তান যদি কাশ্মিরকে পুরোপুরি দখল করতে পারে তাহলে পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাধিক্য নষ্ট হবে এবং তার শাসনকাল আরো অনেকদিন স্থায়ী হবে। এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তিনি ভারতের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হন।
৫. পাকিস্তানের গৌরব ও আয়তন বৃদ্ধি : চীন-ভারত যুদ্ধে ভারতের পরাজয়, কাচ্ছর যুদ্ধে পাকিস্তানের বিজয় এবং পাকিস্তানের বিশাল সৈন্যবাহিনী আইয়ুব খানের মনোবল বৃদ্ধি করে। তাই তিনি ভারত অধিকৃত কাশ্মির দখলের মাধ্যমে পাকিস্তানের আয়তন বাড়াতে সচেষ্ট হন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পিছনে নানাবিধ কারণ বিদ্যমান ছিল। তবে এক্ষেত্রে আইয়ুব খানের উচ্চাভিলাষ বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল বলে বিশ্লেষকগণ মনে করেন।