অথবা, সংবিধান বলতে কী বুঝ?
অথবা,সংবিধান কাকে বলে?
অথবা,সংবিধানের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর: ভূমিকা: প্রতিটি রাজ্যের একটি সংবিধান আছে। সংবিধান হল যে কোন রাষ্ট্র বা সরকারের প্রধান শক্তি এটা প্রতিটি রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য. সংবিধান ছাড়া রাষ্ট্র ক্যাপ্টেন ছাড়া জাহাজের মতো। গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটল থেকে শুরু করে অনেক চিন্তাবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সংবিধানকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন।
এসব সংজ্ঞা থেকে সংবিধানের সঠিক প্রকৃতি ও রূপ বোঝা যায়।
সংবিধান: সাধারণভাবে বলতে গেলে, কীভাবে একটি দেশের সরকার গঠন ও পরিচালনা করা হবে তার বিধিবিধানকে সংবিধান বলে। সংবিধানের ভিত্তিতে সরকার গঠিত হয় এবং এটি সরকারের বিভিন্ন বিভাগ। উদাহরণস্বরূপ, প্রশাসনিক বিভাগ, আইন বিভাগ এবং বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করে, তারা পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ করে। এরিস্টটল সংবিধান ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, “সংবিধান হল একটি জীবন ব্যবস্থা যা রাষ্ট্র নিজের জন্য বেছে নিয়েছে।”
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : সংবিধান সম্পর্কে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর অভিমত রয়েছে। নিম্নে উল্লেখযোগ্য কয়েকজনের সংজ্ঞা প্রদান করা হলো:
সি. এফ. স্ট্রং (C. P. Strong ) এর মতে, “সংবিধান হলো এমন কতকগুলো নিয়মের সমষ্টি, যা দ্বারা শাসকের ক্ষমতা ও শাসিতের অধিকার এবং উভয়ের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য বিধান করা হয়।
লর্ড ব্রাইস (Lord Bryco) এর মতে, “সংবিধান হলো সেসব নিয়মকানুন ও রীতিনীতির সমষ্টি, যেগুলো রাষ্ট্রের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে।
অধ্যাপক এইচ, ফাইনার (Prof. H. Finer) এর মতে, “মৌলিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুষম ব্যবস্থাই সংবিধান।” কে. সি. হুয়ার (K. C. Wheare) এর মতে, “Constitution is that body of rules which regulates the
ends for which and of the organs through which the powers of the government is exercised.” A. B. Dicey 4, “Constitutions as the products of all rules which directly or indirectly
affect the distributions or the exercise of the sovereign powers in the state.” Prof. Ogg and Zink, “Constitution is the fundamental law of special sanctity outlining the structure of a governmental system.”
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, একটি দেশের সংবিধানের মধ্যে ঐ দেশের পরিচালনার যাবতীয় সব বিষয়াদি খুব সূক্ষ্মভাবে তুলে ধরা হয়। একটি সুষ্ঠু সংবিধান ছাড়া কোন দেশ ভালোভাবে পরিচালিত হতে পারে না। তাই বলা হয় সংবিধান হলো রাষ্ট্র পরিচালনার চাবিকাঠি। সুতরাং সংবিধান হলো সেই নিয়মের সমষ্টি যা সরকারের ক্ষমতা নির্ধারণ করে, বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন করে, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করে এবং শাসক ও শাসিতের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করে।