ডিরোজিও ১৮২৬ সাল থেকে ১৮৩১ সাল পর্যন্ত হিন্দু কলেজে শিক্ষকতা করেন।
অর্থাৎ, তিনি প্রায় পাঁচ বছর শিক্ষকতা করেছিলেন।
ডিরোজিও সম্পর্কে আর কিছু জানতে চান?
ডিরোজিও (Henry Louis Vivian Derozio) মাত্র পাঁচ বছর হিন্দু কলেজে শিক্ষকতা করলেও, বাংলার ইতিহাসে তাঁর প্রভাব ছিল অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। এখানে সেই বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
কেন পাঁচ বছর গুরুত্বপূর্ণ ছিল?
ডিরোজিও ১৮২৬ সালের মে মাস থেকে ১৮৩১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত হিন্দু কলেজে (যা বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষকতা করেন।
- সময়কাল: মে, ১৮২৬ – এপ্রিল, ১৮৩১
- মোট সময়: প্রায় ৫ বছর (আসলে ৪ বছর ১১ মাস)
এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি ছাত্রদের মধ্যে যুক্তিবাদী চিন্তা (Rationalism), স্বাধীন ভাবনা (Free Thought) এবং প্রশ্ন করার মানসিকতা (Questioning Authority) ছড়িয়ে দেন।
তাঁর শিক্ষকতার মূল প্রভাব
ডিরোজিও তাঁর ছাত্রদের শুধু পাঠ্যবই পড়াতেন না; তিনি তাদের শিখিয়েছিলেন কীভাবে সমাজের প্রচলিত বিশ্বাসগুলিকে প্রশ্ন করতে হয় এবং কীভাবে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হয়।
- ১. ইয়াং বেঙ্গল (Young Bengal) গোষ্ঠী গঠন: তাঁর অনুগামী ছাত্রদের নিয়ে এই গোষ্ঠী গঠিত হয়। এই যুবকরা সমাজের প্রচলিত কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করত।
- ২. অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন (Academic Association): তিনি ছাত্রদের বিতর্ক সভা আয়োজনে উৎসাহিত করতেন, যেখানে তাঁরা ধর্ম, ঈশ্বর, সমাজ সংস্কার এবং রাজনৈতিক অধিকারের মতো সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে আলোচনা করত।
- ৩. বাংলার নবজাগরণের সূচনা: তাঁর প্রগতিশীল এবং বিপ্লবী চিন্তা-ভাবনা ছিল উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের অন্যতম ভিত্তি।
তাঁর শিক্ষাদানের পদ্ধতি তৎকালীন রক্ষণশীল সমাজ মেনে নিতে পারেনি। ফলে, ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং সামাজিক চাপ-এর কারণে ১৮৩১ সালে তাঁকে কলেজ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এর কয়েক মাস পরই মাত্র ২২ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
আপনি কি ডিরোজিওর ইয়াং বেঙ্গল আন্দোলন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চান?


